এবার পরিবারের কুসংস্কারের বলি হলেন গৃহবধূ। সাপে কামড়েছিল বধূকে। চিকিত্সকের কাছে না গিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ওঝার কাছে। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলল ঝাড়ফুঁক। পরিবারের কুসংস্কারের জেরে মৃত্যু হল তাঁর। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের গোবিন্দপুর এলাকায়।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে মালদহ বিজ্ঞান মঞ্চ। মঞ্চের সম্পাদক সুনীল চন্দ্র দাস বলেন, ‘ এই ঘটনা শুনে লজ্জা লাগছে। সঠিক সময়ে ওই বধূকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, তাঁর প্রাণ বাঁচানো যেত। বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরা সব সময় মানুষকে সচেতন করছে। কিন্তু তার সত্ত্বেও কিছু মানুষ কুসংস্কারকে এখনও আঁকড়ে ধরে বসে আছেন। আমরা এই বিষয়ে আরও বেশি মানুষকে সচেতন করব।’
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই বধূর নাম বিজলী সর্দার (৩৪)।
তাঁর স্বামী কান্দ্রু সর্দার। তিনি পেশায় শ্রমিক। ওই দম্পতি তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে গোবিন্দপুরের বাড়িতে থাকতেন। সোমবার রাতে বিজলীর হাতে একটি বিষধর সাপ কামড়ে দেয়। এর পরেই চিত্কার করতে শুরু করেন ওই বধূ। তাঁর চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তখনই তাঁরা জানতে পারেন সাপে কাটার বিষয়টি। কিন্তু ওই বধূকে হাসপাতালে নয়, নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় ওঝার কাছে। ওঝা কেরামতি দেখাতে শুরু করে। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে ঝাড়ফুঁক। এদিকে ওই বধূর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে গেলে পাশের গ্রামের অপর ওঝার কাছে বধূকে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিষ সেখানেও নামেনি। বিজলীর চিত্কার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা তাঁকে নিয়ে যায় স্থানীয় এক ওঝার কাছে। ওঝা অনেক কেরামতি করলেও বিষ নামাতে পারেনি। গৃহবধূর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পাশের গ্রামের অপর ওঝার কাছে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানেও তার বিষ নামেনি। তখন তাঁকে নিয়ে গ্রামবাসীরা ছোটেন মালদহ মেডিক্যাল কজেজে। তবে সেখানে পৌঁছেও শেষরক্ষা হয়নি। চিকিত্সকরা ওই বধূকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।