সাবিবুর খান, কলকাতা: হিজাব পরার জন্য বাতিল করে দেওয়া হল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কনস্টেবল পদের জন্য আবেদনকারী কয়েকজন মুসলিম মহিলার আবেদনপত্র।
গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে এই পদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য অ্যাডমিট দেওয়া শুরু হয়েছে। পরীক্ষা হবে ২৬ সেপ্টেম্বর। এই পরিস্থিতিতে ফর্ম সংশোধনের কোনো সুযোগ দিচ্ছেনা ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ রিক্রুইটমেন্ট বোর্ড বলে জানিয়েছেন ওই আবেদনকারীরা। ফলে সম্ভবত এবছর পরীক্ষা দেওয়ার আর সুযোগ থাকছেনা আবেদনকারী ওই মহিলাদের।
তবে জানা গিয়েছে, হিজাব পরিহিত আবেদনকারী অনেকজন মহিলার ফর্ম বাতিল করা হয়েছে। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, ফর্মের ছবিতে চুল ঢাকার জন্য বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ, চুল খোলা অবস্থার ছবি দিতে হবে। আর এই অদ্ভুত বাতিলের কারণ শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা।
সল্টলেকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বোর্ডের দফতরে যান ওই মহিলারা। দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে, রাজি হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এমনকি তাঁদের গ্রেফতারেরও হুমকি দেওয়া হয়।
শুধু হিজাবধারী আবেদনকারীরাই নন, বিভিন্ন ভুলের জন্য ফর্ম বাতিলের শিকার হয়েছেন রাজ্যের ৩৫ হাজার আবেদনকারী। এবার ফর্ম সংশোধনের সুযোগ না দেওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারবেনা এত সংখ্যক আবেদনকারী। ফলে ঘোর অনিশ্চিয়তার মুখে তাঁদের ভবিষ্যত।
তুহিনা, সারিকা, সোনামনি, ফেরদৌসি, মহসিনা নামে কয়েকজন আবেদনকারীদের প্রত্যেকের ফর্ম বাতিল করা হয়েছে হিজাব পরার জন্য। আবেদনকারী তুহিনা খাতুন প্রশ্ন তুলে বলেন, “বারবার ফর্ম ফিল আপ করার পরও বাতিল করে দেওয়া হল। তাহলে বোর্ড কেন বললোনা হিজাবধারী মুসলিমরা পুলিশ পেশায় আসতে পারবেনা?”
তাঁর আরও সংযোজন, “আমি তো সাব-ইনস্পেক্টর পদেও আবেদন করেছি, সেই পরীক্ষাও তো দিতে পারবোনা। অনেক জায়গায় হিজাব পরেই রান করেছি, সেখানে গ্রহণ করেছে। তবে এখানে বাতিল কেন?”
আবেদনকারী আরেকজন মহিলার কথায়, “সামান্য ঘোমটা দেওয়ার জন্য আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। তাহলে মুসলিমরা কি পুলিশ হতে পারবেনা? আরক্ষ ভবনের আধিকারিকরা নাম, ঠিকানা নিয়ে জীবন বরবাদ করার হুমকি দিয়েছে। বলেছে, চাকরির আর মুখ দেখতে পাবোনা।”
ওই মহিলা আবেদনকারীরা জানিয়েছেন, “পরীক্ষার এখনও সময় রয়েছে। বোর্ড সবার অ্যাডমিট দেওয়ার ব্যবস্থা করুক, যাতে সবাই পরীক্ষায় বসতে পারে, এই আবেদন করছি আমরা।”
অভিযোগকারী মহিলা কি বললেন, শুনে নিন….