নিউজ ডেস্ক: দিলীপ ঘোষের জায়গায় সদ্য স্থলাভিষিক্ত হলেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। মিডিয়া থেকে শত হস্ত দূরেই ছিলেন তিনি। আনকোরা এই মুখকে বঙ্গ BJP-র প্রধান হিসেবে নিয়ে এল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দিলীপ ঘোষের জুতোয়া পা গলিয়েছেন তিনি। কতটা পোক্ত সংগঠক হিসেবে তাঁর ভূমিকা? ইতিমধ্যেই কাটাছেড়া শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
এমনিতে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ‘রাজ্য সভাপতি হিসেবে দিলীপের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পর দিলীপের বিরুদ্ধে বিজেপি অভ্যন্তরে ক্ষোভের মাত্রা বাড়তে থাকে। অনেকেই দাবি করতে থাকেন, দিলীপ যে ধরনের ভাষা প্রয়োগ করেন, তাতে শহুরে ভোটারদের একটা বড় অংশ বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পা চোটের পর ‘হাফপ্যান্ট’-সহ বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য করে আখেরে বিজেপিকে বিপদে ঠেলে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে তাঁরা দাবি করেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আকাশকুসুম স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন দিলীপ। যদিও দিলীপ অনুগামীদের দাবি ছিল, দিলীপের হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাংসদ সংখ্যা দুই থেকে বেড়ে ১৮ হয়েছে। বিধানসভায় আসন সংখ্যা তিন থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৭। তখনও দিলীপের ভাষা একইরকম ছিল। তাহলে এখন কেন দোষারোপ করা হচ্ছে?
উত্তরবঙ্গের সাংসদকে দলের সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়ার ঘটনাকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই উত্তরবঙ্গে ভিত শক্ত করেছে গেরুয়া শিবির। বিধানসভায় আশানুযায়ী ফল না করলেও উত্তরবঙ্গ পদ্মফুল শিবিরকে নিরাশ করেনি। কিন্তু ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই পদ্মের গড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বেসুরো একাধিক বিধায়ক। দল ছাড়ার সময় অনেকেই ঠারেঠোরে দিলীপ ঘোষের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। বিভিন্ন সময় তাঁর আলটপকা মন্তব্যের জেরে বিপাকে পড়েছে দলও। রাজনৈতিক মহলের মতে, দিলীপবাবুর গরুর দুধে সোনা কিংবা হাফপ্যান্ট মন্তব্যে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপির ভাবমূর্তি।
আবার সদ্য গেরুয়া শিবিরকে বড় ধাক্কা দিয়ে তৃণমূলে গিয়েছেন বাবুল। তাঁর সঙ্গে দিলীপ ঘোষের সম্পর্ক কার্যত আদায়-কাঁচকলায় বলে দাবি করেন অনেকেই। বাবুলও ঘুরিয়ে বিজেপির সদ্য প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। এর পরই রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরানো হল তাঁকে, যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বালুরঘাটের সাংসদ রাজনীতিতে নতুন হলেও আরএসএস ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। আবার শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক থেকেও দিলীপ ঘোষের তুলনায় এগিয়ে তিনি।