জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার দূত কিম সং বলেছেন, আত্মরক্ষার ন্যায্য অধিকারে উত্তর কোরিয়া মিসাইল পরীক্ষা করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের সাধারন পরিষদের অধিবেশনে ব্ক্তব্য দিতে গিয়ে এই কথা বলেন তিনি। কিম সং বলেন, ‘আমরা আমাদের জাতীয় প্রতিরক্ষা কাঠামো তৈরি করছি যাতে নিজেদের রক্ষা করতে পারি এবং দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারি।’
জাতিসঙ্ঘ অধিবেশনে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তবর্তী দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩০ হাজার সৈন্য মোতায়েন করে রেখেছে। অপরদিকে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ১৯৫০-৫৩ সালে সংগঠিত যুদ্ধ বন্ধেরও আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তি হয়নি বলে জানান তিনি।
কিম সং বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি তার শত্রুতামূলক আচরণ ত্যাগ করে তবে উত্তর কোরিয়াও স্বেচ্ছার তাতে সাড়া দেবে। কিন্তু শিগগিরই এমন কোনো ঘটনা ঘটবে বলে প্রত্যাশা করেন না বলে জানান তিনি।
এর আগে উত্তর কোরিয়া স্বল্প পাল্লার একটি মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে এই মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হয় বলে জানায় দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক সূত্র জানায়, উত্তর কোরিয়ার পাহাড়ি জাগানগ প্রদেশে এই মিসাইল পরীক্ষা করা হয়। মিসাইলটি উত্তর কোরিয়ার পূর্বে সমুদ্রসীমার মধ্যে গিয়ে পড়ে।
উত্তর কোরিয়ার মিসাইল পরীক্ষার জেরে দক্ষিণ কোরিয়ায় এক জরুরি নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠক থেকে নিন্দা জানানো হয়। বৈঠকে বলা হয়, এমন সময় এই মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হলো যখন কোরীয় উপদ্বীপে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সংকটপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
অপরদিকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদা সুগা জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণান্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়টি জাপান সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের নিয়ন্ত্রণ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে কোরীয় উপদ্বীপকে উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে ভাগ করে তৎকালীন পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়া। ১৯৫০ সালে উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট একনায়ক কিম ইল সাঙ পুরো কোরিয়াকে তার অধীনে আনতে দক্ষিণ কোরিয়ায় হামলা করলে কোরিয়া যুদ্ধ শুরু হয়। তিন বছর যুদ্ধের পর ১৯৫৩ সালে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও এখনো দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।
সূত্র : নয়া দিগন্ত