
ভারতের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম অপারেটর ভোডাফোন আইডিয়া লিমিটেড (Vodafone Idea) কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে যে ২০২৬ সালের পর সরকারি সহায়তা ছাড়া সংস্থাটি আর নিজেদের উদ্যোগে পরিচালনা করতে পারবে না। সংস্থার সিইও অক্ষয় মুন্দ্রা ২০২৫ সালের ১৭ এপ্রিল টেলিকম সচিবকে পাঠানো চিঠিতে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেভিনিউ (AGR) বকেয়া পরিশোধে সরকারি সাহায্য না পেলে এবং ব্যাংকগুলি থেকে সময়মতো ফান্ডিং না এলে ভোডাফোন আইডিয়ার পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট ভোডাফোন আইডিয়ার ৩০ হাজার কোটি টাকার AGR বকেয়া মকুবের নতুন আবেদন গ্রহণ করেছে। ১৯ মে প্রধান বিচারপতি বি. আর. গভাই ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চে এই বিষয়ে শুনানি হবে। সংস্থার আইনজীবী মুকুল রোহতগি জরুরি শুনানির জন্য আবেদন করেছেন, যা টেলিকম খাতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ভোডাফোন আইডিয়া টেলিকম মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, ব্যাংকগুলি থেকে ঋণ না পেলে তাদের বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। সংস্থাটি সরকারের কাছে জোর দিয়ে বলেছে, টেলিকম খাতকে একটি “থ্রি-প্লেয়ার মডেল” (তিনটি প্রধান বেসরকারি সংস্থা) হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যা গ্রাহকদের পছন্দ ও বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় রাখবে। তবে, সরকারের জন্য স্পেকট্রাম নিলাম থেকে রাজস্ব আদায়ই এখন বড় লক্ষ্য।
ভোডাফোন আইডিয়ার মতে, সরকারি সহায়তা পেলে সংস্থাটি তাদের ৩০ হাজার কর্মীর চাকরি রক্ষা করতে পারবে এবং ২০ কোটি গ্রাহককে নিরবিচ্ছিন্ন পরিষেবা দিতে সক্ষম হবে। অন্যথায়, সংস্থাটির পুনরুদ্ধার বা বাজার থেকে ফিরে আসার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

যদি ভোডাফোন আইডিয়া বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে ভারতের টেলিকম বাজারে জিও ও এয়ারটেলের ডুয়োপলি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, যা গ্রাহকদের জন্য সুবিধাজনক নাও হতে পারে। তাই, সরকার ও আদালতের সিদ্ধান্ত শুধু একটি কোম্পানির ভাগ্য নয়, বরং সমগ্র টেলিকম ইকোসিস্টেমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই সংকটের সমাধানে সরকার, ব্যাংক ও বিচারিক ব্যবস্থার ভূমিকা এখন সমস্ত স্তরের স্টেকহোল্ডারদের জন্য চিন্তার বিষয়। ভোডাফোন আইডিয়ার ভবিষ্যৎ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে আগামী কয়েক মাসের নীতিগত সিদ্ধান্তের ওপর।