এনবিভি ডেস্ক : আইকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানেন বিজেপির বিধায়কের পরিবার ও বিধায়ক। গত বুধবার গুজরাতের সুরাতে এক মহিলা কনস্টেবলের কাজে হইহই পড়ে যায়। তিনি লকডাউন চলাকালীন এক বিধায়কের ছেলে ও তাঁর বন্ধুদের গাড়ি থামিয়েছেন। তাতেই বিপত্তি, উক্তি পুলিশের উপরে শাস্তি। সেই ঘটনার চারদিন যেতে না যেতেই বদলি করা হল ওই মহিলা কনস্টেবলকে।
সূত্রের খবর, বুধবার সুনীতা যাদব নামের ওই কনস্টেবলের এই কাজে ব্যাপক হইচই পড়ে যায় সুরাতে। এই ঘটনার ফলেই ওই মহিলা কনস্টেবলকে বদলি করা হচ্ছে বলে খবর। এই খবর ছড়ানোর পরে ফের শুরু হয়েছে সমালোচনা। বিরোধীদের অভিযোগ প্রশাসনকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। রাজনীতির চাপে পুলিশের হাত বেঁধে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের।
জানা গয়েছে, গত বুধবার বরাচা রোডের বিধায়ক তথা স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী কুমার কানানির ছেলে প্রকাশ কানানি ও তাঁর বন্ধুরা গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন। তাঁদের আটকান কনস্টেবল সুনীতা যাদব। তিনি অভিযোগ করেন, কার্ফুর সময়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছেন তাঁরা। তার উপরে কারও মুখে মাস্ক ছিল না। তার মানে আইন ভেঙেছেন তাঁরা।
নিজেদের দোষ স্বীকার করা তো দূর, উলটে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়ান প্রকাশ। এই ঘটনার একটি অডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মডিয়ায়। সেখানে ওই বিধায়কের ছেলেকে বলতে শোনা যায়, তিনি ওই একই জায়গায় ওই কনস্টেবলকে ৩৬৫ দিন দাঁড় করিয়ে রাখবেন। তার জবাবে সুনীতা বলেন, তিনি তাঁদের গোলাম নন যে তাঁদের কথা মতো চলবেন। রবিবার জানা যায়, সুনীতা যাদবকে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে বদলি করা হয়েছে। এই ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরেই সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, বিজেপি শাসনে আইন মেনে কাজ করলে এভাবেই বদলি করা হয়। যাঁরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁদের এভাবেই খেসারত দিতে হয়। অন্যদিকে নেতা-মন্ত্রীদের ছেলেরা আইন ভেঙেই চলেছে। পুলিশকে তারা নিজেদের সম্পত্তি বলে মনে করছে।
এই ঘটনার পরেই অবশ্য ছুটিতে চলে গিয়েছিলেন সুনীতা। শনিবার সুরাতের পুলিশ কমিশনার আর বি ব্রহ্মভাট একটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে রবিবার প্রকাশ কানানি ও তাঁর বন্ধুদের গ্রেফতার করা হয়। জামিনে ছাড়াও পেয়ে যান তাঁরা।
শুরু হয়েছে অভিযোগ ও সমালোচনার ঝড় শুধু বিরোধীরা নয়, এই ঘটনায় সমালোচনা শুরু হয়েছে সাধারণ মানুষদের তরফেও। তাঁদের অভিযোগ, যাঁরা আইন বাঁচানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদেরই অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সরকার নিজেই যে নিয়ম বানিয়েছে, সেই নিয়ম তাদেরই পরিবারের লোক মানছে না। আর তা থামাতে গেলে তার খেসারত দিতে হচ্ছে সুনীতা যাদবের মতো কনস্টেবলদের। এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। বিজেপি বিধায়ককে দল কতটা সাপোর্ট করে দেখার বিষয়। এই বিষয়ে দল চুপ, মুখে কুলুক এঁটেছেন।