রিপোর্টার
মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ডিঙ্গেদহ হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী নিখোঁজ নুপুরকে অভিযোগ প্রাপ্তির তিন ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার করলো চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর থানাধীন ডিঙ্গেদহ হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। হায়দারপুর গ্রামের আরশেদ আলীর মেয়ে নুপুর (১৪)।
গতকাল রবিবার (২৬জুলাই) সকাল অনুমান ৬ টার সময় বাসা হতে প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে স্কুলে রওনা করে। পরবর্তীতে নুপুর তার বাড়িতে আর ফিরে আসে নাই। পরে অজ্ঞাত ব্যক্তি একটি মোবাইল হতে ফোন করে জানায় যে নুপুর তাদের হেফাজতে আছে। তাদের ৩০ হাজার টাকা দিলে, নুপুরকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। উক্তরূপ অভিযোগটি ২৭ জুলাই সোমবার সকাল ১০ টার সময় পেলে তা চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামকে অবহিত করলে, তিনি ত্বরিত ভিকটিম উদ্ধারের নির্দেশনা প্রদান করেন। পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় বিষয়টি সাধারণ ডায়েরি ভুক্ত করে এসআই আহসানুর রহমানকে তদন্ত করে ভিকটিমকে উদ্ধার করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে, এসআই আহসানুর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মোবাইলের রেডিও লোকেশন এবং সিডিআর সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করে ভিকটিম উদ্ধার কার্যক্রম চালানো শুরু করেন। এক পর্যায়ে দুষ্কৃতকারীরা জানতে পেরে মেয়েটিকে ঝিনাইদহ বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ছেড়ে দেয়। ঝিনাইদহ থেকে উদ্ধার করার পর ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, দুষ্কৃতকারীরা মোবাইলে এই মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাবের মাধ্যমে ট্রাপ করে ফুসলিয়ে ঝিনাইদহ শৈলকুপা এলাকায় নিয়ে যায়। মেয়েটি নিজে মোবাইল ব্যবহার না করলেও মায়ের মোবাইল ব্যবহার করত। পুলিশের তৎপরতা জানাজানি হলে অর্থাৎ দুষ্কৃতকারীদের মোবাইল নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করলে, এক পর্যায়ে দুষ্কৃতকারীরা আজ সোমবার (২৭ জুলাই) দুপুর ০১ টার দিকে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের শৈলকুপা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে। তাদের কাজই হচ্ছে এই বয়সের মেয়েদের প্রেমের মাধ্যমে ট্র্যাপ করে ফুসলিয়ে একটি নির্ধারিত স্থানে নিয়ে টাকার মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া। তাদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হবে। সসম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তানরা এসব চক্রের সদস্য বলে নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এই চক্রটা বাহিরে জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে। এই চক্রকে খুব শীঘ্রই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। তাকে কাউন্সেলিং করা হয়েছে। এলাকাবাসী পুলিশি তৎপরতায় মেয়েটি উদ্ধারের পর চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। অফিসার ইনচার্জ চুয়াডাঙ্গা সদর থানা সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ তথা প্রত্যেকটি অভিভাবককে এই বয়সের মেয়েদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্যে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।