এনবিটিভি ডেস্কঃ সিগারেট চুরির অভিযোগে ১৯ বছর বয়সী জিশানের তিন মাস জেল হেফাজতে রাখা হয়। পরে তিহার জেলে তাকে হত্যা করার অভিযোগ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের। তিহার জেলে ১৯ বছর বয়সী মুসলিম ছেলের হত্যার নিন্দা করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। এই মর্মান্তিক ঘটনার তদন্ত করে কেন্দ্রীয় জেল সুপারের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরদারিতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য জোর দেওয়ার কথা জানায়। সরকারের ফ্যাসিবাদী নকশার বিরুদ্ধে এই জঘন্য কাজের সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং এবং জিশানের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
জিশানের মর্মান্তিকভাবে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সম্পর্কে একটি তথ্য অনুসন্ধান করে তা পরে প্রকাশ করে জনহস্তাক্ষেপ দাবি করেছেন যে, সারা শরীরে আঘাতের গুরুতর চিহ্ন রয়েছে এবং তার হাড়গুলি ভাঙ্গা ছিল। এটি ভারতের আইনশাস্ত্রের শোচনীয় অবস্থাকেও তুলে ধরে, যেখানে একটি ছেলেকে সিগারেটের প্যাকেট চুরি করার অভিযোগে তিন মাস কাটাতে হয়েছিল।
১৯ ফেব্রুয়ারী জনহস্তাক্ষেপ জিশানের মৃত্যুর পরের ঘটনাগুলির ক্রম অনুসন্ধানের জন্য জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডঃ বিকাশ বাজপেই এবং সিনিয়র সাংবাদিক সত্যেন্দ্র রঞ্জনের সমন্বয়ে একটি দুই সদস্যের দল গঠন করে।
জিশান বিহারের বাসিন্দা। তার বাবা-মা এবং সন্তানদের সাথে গত ৩০ বছর ধরে বসবাস করছেন। জিশানের বাবা মোহাম্মদ ইয়াকুব (৪৫) একজন রিকশাচালক। তার মা শান্নো (৪২)কলোনিতে গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করেন। জিশান নিজে মোটর মেকানিকের কাজ করতেন।
১৯ নভেম্বর ২০২১ তারিখে জিশান তার দোকানের তালা ভেঙে রাস্তার পাশের দোকান থেকে সিগারেটের প্যাকেট চুরি করার অভিযোগে অনিল চৌরাসিয়ার করা অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল।
জিশানের বিরুদ্ধে লিখিত এফআইআর নং ৪৫৫/২১। তাঁর বিরুদ্ধে ধারা ৪৫৭ অর্থাৎ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত অপরাধ করার জন্য বাড়িতে লুকিয়ে থাকা বা রাতে বাড়ি ভাঙা মামলা করা হয়। এবং ধারা ৩৮০ অর্থাৎ বাসস্থান, বাড়িতে চুরি ইত্যাদি এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) আইনের ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান।
জিশান প্রায় তিন মাস জেলে ছিল এবং শেষ পর্যন্ত সে ১৫ ফেব্রুয়ারি তার জীবন হারায়।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দাবী-
তিহারের কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপারকে অবিলম্বে বরখাস্ত করতে হবে। কারণ তার নজরে থাকা বন্দীদের নিরাপত্তা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যান্য কারাগারের কর্মীরা যারা এই মামলার সঙ্গে যুক্ত আছে তাদের বর্তমান পদ থেকে অবিলম্বে পরিবর্তন করতে হবে।
জিশান হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের উপযুক্ত ধারায় মামলা করতে হবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) নজরে অবিলম্বে এই বিষয়ে একটি তদন্ত শুরু করতে হবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) অবিলম্বে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবে।
সরকারের পক্ষ থেকে জিশানের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তদন্ত কার্যক্রমের ফলাফলের ফলস্বরূপ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ ফৌজদারি মামলা করতে হবে।