Monday, June 9, 2025
33 C
Kolkata

পাকিস্তানের মধ্যে এক টুকরো ‘মদীনা’, গ্রামের সবাই নামায পড়েন,রোজা রাখেন, নিষিদ্ধ গান, সুদ,ধূমপান এবং কবর পূজা

নিউজ ডেস্ক : পাকিস্তানের মধ্যে এমন এক গ্রামের অস্তিত্ব আছে যেখানকার মানুষ সম্মিলিত ভাবে ইসলামের প্রায় সমস্ত হুকুম মেনে চলার জন্য শপথ নিয়েছেন। গ্রামটিতে প্রকাশ্য গুনাহ প্রায় হয় না বললেই চলে। নেই কোনো ভিক্ষুক। সবাই উপার্জন করেন। একটি মাদ্রাসার শিক্ষকদের দাওয়াতের কারণে গত ৩০ বছরের প্রচেষ্টায় এমন ব্যতিক্রমী মহল্লা তৈরি করেছেন তারা। গ্রামের পরিবেশ আগন্তুক কেউ দেখলে ভাববেন ঠিক যেন একটুকরো মদীনা। যেখানে রাসূল (সাঃ) এর দেখানো পথে স্বেচ্ছায় চলার শপথ নিয়েছেন সবাই।

 

এই প্রতিবেদনে পাকিস্তানের এমন একটি গ্রামের কথা বলবো, যেখানে ছোট থেকে বড় সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। ওই গ্রামের কেউ নেশা করেন না। এমনকি সিগারেটও খান না। পুরো গ্রামের দোকানগুলোতে গত ২০ বছর ধরে সিগারেট বিক্রিই করা হয় না। গ্রামে বিয়েশাদি হয় মসজিদে। সাদাসিধেভাবে। এক্ষেত্রে ইসলামী বিধানের পরিপূর্ণ লক্ষ্য রাখা হয়। বিয়ের মধ্যে গানবাজনা হয় না। কোনো বিয়েতে গানবাজনার ব্যবস্থা করা হলে সামাজিকভাবে ওই বিয়েকে বয়কট করেন সবাই। গ্রামের প্রতিটি কবর মাটির। ইটবালু দিয়ে পাকা করা হয় না। ওই গ্রামে কোনো ভিখারি নেই। সবাই কাজকর্ম করে উপার্জন করেন।

 

 

 

গ্রামটি পাকিস্তানের ফয়সালাবাদে। জানা যায়, ওই গ্রামে ৯০ বছরের পুরোনো একটি মাদরাসা রয়েছে। যেখান থেকে সাধারণ মানুষকে ইসলামের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়। যেকোনো ধরনের সমস্যা নিয়ে লোকজন মাদরাসায় হাজির হন আগে। ওই মাদরাসার প্রভাবেই পুরো গ্রামে এমন পরিবর্তন এসেছে বলে দাবি করেন, মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ আমীন। তিনি টানা ৪০ বছর ধরে ওই মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন।

 

হাফেজ আমীন পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম উর্দু পয়েন্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমাদের গ্রামে পরিবর্তন এমনিতেই আসেনি। আমাদের মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ গ্রামে দাওয়াতি কাজ করেছেন। মানুষের মাঝে ইসলামকে সুন্দর ও সহজভাবে উপস্থাপন করেছেন। ইসলামের বিধান মানার ক্ষেত্রে এ গ্রামের সবাই একপন্থী। যার কারণে সবাইকে এক দিকনির্দেশনায় পথ দেখানো সহজ হয়।

 

হাফেজ আমীন বলেন, আমাদের গ্রামের এক লোক তার পরিবারের এক সদস্যের বিয়েতে গানবাজনার ব্যবস্থা করলে ওই বিয়েতে গ্রামের কেউ যায়নি। এমনকি তার নিকটাত্মীয়রাও যায়নি। গ্রামের পরিবর্তনের পেছনে সবার এমন নজিরবিহীন একতাও একটি কারণ বলে মনে করেন তিনি।

 

তিনি বলেন, আমাদের গ্রামের কোনো দোকানে বা বাড়িতে টিভি নেই। হাতেগোনা কয়েকটি বাড়িতে আছে। তবে, আমাদের মাদরাসা থেকে তাদের বলে দেয়া আছে–টিভি চালালেও ভলিউম কমিয়ে দেখতে হবে। কোনো পথচারী কোনো বাড়ি থেকে টিভির শব্দ শুনতে পেলে সাথে সাথে তিনি দাঁড়িয়ে যান এবং ওই বাড়িতে গিয়ে লোকজনকে বোঝান। এসব বিষয়ে গ্রামের কেউ কখনো বিতর্ক করেন না বলেও জানান তিনি। বরং দুঃখপ্রকাশ করে অসামাজিক বা অনৈসলামিক কাজ থেকে বিরত থাকেন।

 

সূত্র : নয়া দিগন্ত

Hot this week

গাজার রাফাহ সহায়তা কেন্দ্রেই মৃত্যু: ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২৭ জন ফিলিস্তিনি

ফের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় রাফাহ শহরের একটি...

মাদ্রাসা রক্ষায় আজমগড়ে সম্মেলন, আদালতের পথে জামিয়ত উলামা-ই-হিন্দ

উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে আয়োজিত হয় একটি মাদ্রাসা রক্ষা সম্মেলন...

ঈদের আগে উত্তেজনা: গাজিয়াবাদে মুসলিম মাংস বিক্রেতাকে গুলি করার হুমকি বিজেপি বিধায়ক নন্দ কিশোর গুর্জর

উত্তরপ্রদেশর গাজিয়াবাদে বিজেপি বিধায়ক নন্দ কিশোর গুর্জর সম্প্রতি একটি...

টাকার পরিমান দেখে চোখ ধাঁধিয়ে গেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার, গ্রেপ্তার ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস অফিসার

চোখ ধাঁধানো গুপ্তধনের সন্ধান। ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস অফিসার অমিত...

Topics

গাজার রাফাহ সহায়তা কেন্দ্রেই মৃত্যু: ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২৭ জন ফিলিস্তিনি

ফের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় রাফাহ শহরের একটি...

মাদ্রাসা রক্ষায় আজমগড়ে সম্মেলন, আদালতের পথে জামিয়ত উলামা-ই-হিন্দ

উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে আয়োজিত হয় একটি মাদ্রাসা রক্ষা সম্মেলন...

গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা!ধ্বংস করা হল ২৪০টির বেশি ঘর, নিহত হাজার হাজার নিরীহ মানুষ

গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে আসছে।...

Related Articles

Popular Categories