নিউজ ডেস্ক: কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার খবর প্রায়শই দেখা যায় সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে। তবে এই সব জঙ্গি হামলা গুলোর মধ্যে সব গুলো সত্যিই জঙ্গি হামলা নাকি সাজানো হামলা সেটা নিয়ে এক বিরাট প্রশ্ন উঠল। কারণ, এবার ভুয়া জঙ্গি হামলা মঞ্চস্থ করতে গিয়ে হাতে নাতে কাশ্মীর পুলিশের হাতে ধরা পড়ল দুই বিজেপি নেতা। ঘটনা উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলার। মিথ্যে নাটুকে হামলা চালানোর অভিযোগে তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা আধিকারিকদেরও। ঠিক কী ভাবে করা হয়েছিল ভুয়োর হামলার ছক সাজানোর পরিকল্পনা, সে সম্পর্কে দু’-এক দিনের মধ্যেই বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার।
কিন্তু কেন ভুয়ো হামলা সাজানোর মতলব করলেন ওই বিজেপি নেতারা তার প্রকৃত কারণ এখন জানা যায়নি। তবে পুলিশের অনুমান, নিজেদের নিরাপত্তা আরও খানিক বাড়াতেই এই পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। অভিযুক্ত ইসফাক আহমেদ মীর কুপওয়াড়ার বিজেপি আইটি সেলের প্রধান। অপরজন বশরত আহমেদ দলের জেলা মুখপাত্র। তাঁরা নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করে ওই ভুয়ো হামলার ঘটনা সাজান বলে অভিযোগ।
ইসফাকের বাবা মহম্মদ শাফি মীর কুপওয়ারায় বিজেপির জেলা সভাপতি। ধরা পড়ে যাওয়ায় ইসফাককে সাসপেন্ড করে দিয়েছে বিজেপি। যতদিন এই ঘটনার তদন্ত চলবে ততদিন তিনি সাসপেন্ডই থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
গত ১৬ জুলাই ইসফাক অভিযোগ করেন, কুপওয়াড়ার গুলগামে ত্রাণ বণ্টনে গিয়ে জঙ্গি হামলায় পড়তে হয়েছিল তাঁকে। এমনকী জঙ্গিদের একটি গুলি তাঁর পায়ে এসেও বেঁধে বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। জানিয়েছে, সেদিন কোনও জঙ্গি হামলাই হয়নি ওখানে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল, ইসফাকের নিরাপত্তা আধিকারিকের বন্দুক থেকেই দুর্ঘটনাবশত বেরিয়ে গিয়েছিল গুলি। এরপরই জঙ্গি হামলা সন্দেহে অন্য নিরাপত্তা আধিকারিকরাও গুলি চালান।
কিন্তু পরে সামনে আসে আসল সত্য। জানা যায়, ইসফাক, বশরত ও তাঁদের নিরাপত্তা আধিকারিকরা মিলেই ওই ভুয়ো হামলা সাজিয়েছেন। অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হলে তাঁদের সাত দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তবে এখন নেট মাধ্যমে প্রশ্ন উঠছে এই সাজানো জঙ্গি হামলা কি এই প্রথম? নাকি এর আগেও এমন হয়েছে? উল্লেখ্য, কাশ্মীরে জঙ্গি হামলা হলে সেখানে কোন রাজনৈতিক দলের জন্য তা রাজনৈতিক সুবিধা প্রদান করে তা অতি সহজে বোধগম্য। আর এবারও এই সাজানো জঙ্গি হামলার পিছনে আছে সেই দলেরই দুই নেতা। আবার সামনে উত্তর প্রদেশ সহ আরো চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। বেকায়দায় থাকা বিজেপি ইচ্ছা করে তাদের নেতাদের দিয়ে এমন করাচ্ছে না তো? এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেনি তো? প্রশ্ন নেট মাধ্যমে। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখযোগ্য, পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার টাইমিং এর ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দভালকে জেরা করে সত্য উৎঘাটনের সওয়াল করেছিলেন MNS নেতা রাজ ঠাকরে। বিরোধীদের তরফ থেকে বার বার দাবি করা হলেও বিজেপি সরকারের তরফ থেকে পুলোয়ামা জঙ্গি হামলার তদন্ত করে তার সত্যতা গোটা দেশের সামনে তুলে ধরা হয়নি। আবার এই ঘটনার পর নতুন করে জঙ্গি হামলা নিয়ে সন্দেহের উদ্রেগ হবে।