
মঙ্গলবার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট রুম থেকে আগুনের লেলিহান শিখা হাসপাতালের সবগুলো ওয়ার্ডকে গ্রাস করে ফেলে। মুহূর্তের মধ্যে কালো ধোঁয়ার কবলে চলে যায় ওয়ার্ডগুলি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কালো ধোঁয়া দেখামাত্র তারা ছুটে হাসপাতাল থেকে বেরোনোর চেষ্টা করে। এই ঘটনা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, নার্স এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত চিকিৎসকদেরও আতঙ্কিত করে তোলে।

বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত রোগী সহ চিকিৎসকদের ফুসফুসে যাওয়া মাত্রই, শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। কোনরকমে হাসপাতালে উপস্থিত সমস্ত মানুষকে বের করে আনার চেষ্টা করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আপ্রাণ চেষ্টায় পরিস্থিতিকে সাময়িক ভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এরপর দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করে, হাসপাতাল ভবনের পেছনে ওয়েস্ট রুম থাকার কারণে, বিষাক্ত কালো ধোঁয়া খুব সহজে ওয়ার্ডে ঢুকে যায়। কর্তৃপক্ষ আআরও অনুমান করেছে, বিড়ি সিগারেট জাতীয় কোন বস্তু ওয়েস্ট রুমে ফেলার কারণে এই আগুন লাগতে পারে। অপরদিকে হাসপাতলে চিকিৎসাধীন রোগীরা তোপ দেগেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপর। তাদের দাবি হাসপাতালে কর্মরত সাফাই কর্মীরা এই আগুন লাগার পেছনে দায়ী।
ঘটনা প্রসঙ্গে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের কোন বিবৃতি পাওয়া যায়নি। এর আগেও পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে অনুন্নত পরিকাঠামোর অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যেকটি হাসপাতালে জরুরীকালীন পরিষেবা থাকা একান্ত প্রয়োজন। তবে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ছিল কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে জরুরি এমার্জেন্সি এক্সিট নিয়েও। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরিসেবা পুরোপুরি বিধ্বস্ত বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ। দিনের শেষে কি হবে বাংলার মা, মাটি, মানুষের পরিণতি? স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সরকারি গাফিলতিতে কি অকালে প্রাণ হারাবে বাংলার সাধারণ মানুষ? নানান মহলে উঠছে প্রশ্ন।