এনবিটিভি ডেস্ক : ভারতে তরবারির সাহায্যে ইসলামের প্রচার ও প্রসার সম্পর্কে সাম্প্রদায়িক সংগঠনগুলির দ্বারা প্রচারিত মিথ বা বানোয়াট তথ্যকে বাতিল করেদেন, কর্ণাটক বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার কেআর রমেশ কুমার বলেন যে, “যদি ইসলাম তরবারির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ত, তাহলে আজ ভারতে একটিও হিন্দু টিকে থাকত না”।
গত ২৬শে সেপ্টেম্বরে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ড:এস.ওয়াই কুরাইশি “দ্য পপুলেশন মিথ” নামে একটি বই এর মোড়ক উম্মোচন করার সময় রমেশ কুমার সাম্প্রদায়িক শক্তিকেও তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “তারা (যারা মুসলিমদেরকে বাঁকা চোখে দেখছে) ভারতের সংবিধানকে ধ্বংস সাধনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে”। রমেশ কুমার যিনি প্রাক্তন বিধায়ক ও কর্নাটকের স্পীকার ছিলেন।
রমেশ কুমার ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে কর্ণাটক বিধানসভায় ১৬ তম স্পিকার ছিলেন । তিনি বর্তমানে হাউসে কোলার জেলার শ্রীনিবাসপুর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিনিধি।
রমেশ কুমার বলেন, “ তরবারির দ্বারা ভারতে ইসলাম প্রচার করা হয়েছিল, একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচারনা, যার কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। তিনি আরও বলেন, দেশের জন্য তাদের (মুসলিমদের) অবদানের পাশাপাশি ভারতের মুসলিম শাসন এবং এর অমূল্য রেখে যাওয়া ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা চলছে”।
ড: এস.ওয়াই কুরেশির বই নিয়ে খুশি প্রকাশ করে রমেশ কুমার বলেন, “বইটির মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা বিস্ফোরণের অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে মুসলমানরা জনসংখ্যার দিকদিয়ে হিন্দুদেরকে ছাড়িয়ে যাবে এই সব বিষয়ে উল্লেখ করেছেন”।
প্রাক্তন স্পিকারের মতামতের সাথে একমত হয়ে, কর্ণাটকের প্রাক্তন মন্ত্রী এইচসি মহাদেবাপ্পা বলেন যে “মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তারা জোর করে ইসলাম প্রচার করেছিল। তার বিন্দু মাত্র ভিত্তি নেই এবং কোনো প্রকার ঐতিহাসিক সত্যতা নেই”।
তিনি আরও বলেন, “মুসলমানরা এই দেশে ৮০০ বছর এবং মুসলিম শাসনের পরেই ২০০ বছর ধরে ব্রিটিশরা শাসন করেছে, কিন্তু সেই দীর্ঘ কালীন সময়কালে ভারতকে ইসলামী রাষ্ট্র কিংবা খ্রিস্টান রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার কোন চেষ্টা করা হয়নি।”
বই প্রকাশ উপলক্ষে বিশিষ্ট লেখক এবং প্রাক্তন আইএএস অফিসার ড: এস.ওয়াই কুরেশি বলেন, “মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির উপর ডানপন্থীদের দ্বারা প্রচারিত বক্তব্যের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই বক্তব্যের ফলে বেশ কিছু মিথ বা কল্পকাহিনীর জন্ম হয়েছে, যা জনসংখ্যা তাত্ত্বিক সংখ্যা গরিষ্ঠতার আশঙ্কার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে”।
তিনি আরও বলেন যে তিনি পরীক্ষামূলক প্রমাণ পত্র এবং সরকারি তথ্য ব্যবহার করে মিথ বা কল্পকাহনীকে ধ্বংস করে দিয়েছেন । তিনি বলেন, “এটি ভারতে প্রথম এমন বই যা ধর্মীয় লেন্সের মাধ্যমে দেশের জনসংখ্যা মূল্যায়ন করে”।