বৃষ্টির জলে ভেঙ্গে পড়ল একমাত্র সম্বল বাড়ি, বাড়ি হারিয়ে রাস্তায় আঞ্জুরা

বিশ্বজিৎ কর্মকার, মুর্শিদাবাদঃ জমা জলে ভিত হয়েছে দুর্বল। তাতেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়ল মাটির বাড়ি। কোনোক্রমে প্রাঁনে বাঁচেন আঞ্জুরা। ঘর হারিয়ে এখন পরের বাড়িই বসবাস। মুর্শিদাবাদের ডোমকলের রায়পুর পঞ্চায়েতের নরজপুর এলাকার বাসিন্দা আঞ্জুরা বেওয়া। পরিবারে তিনি একাই। ২০ বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন তিনি। সম্বল শুধুমাত্র ভিটে টুকুই। এবাড়ি ওবাড়ি থেকে চেয়ে চিন্তে কোনোরকম চলে সংসার। হঠাৎ বৃষ্টি বেশী হবার কারনে নরজপুর মিঞা পাড়ায় জল জমে অধিকাংশের বাড়িতে। তারফলেই মাটির ভিত হতে থাকে নরম। তখন থেকেই আশঙ্কায় দিন কাটাতেন তিনি।

 রবিবার প্রতিদিনের মতো ঠিকই ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘড়ির কাঁটা সন্ধে সাতটা। হঠাৎ ঘরের পিছনের দেওয়ালে ফাঁটল দেখতে পায় স্থানীয়রা। দেখতে দেখতেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়ে। স্থানীয়রা চিৎকার করে ডাকে আঞ্জুরাকে। ঘর থেকে বেরিয়ে আসতেই পাশের দেওয়াল পড়ে পুরো ঘর ভেঙ্গে যায়। তখন তিনি বলেন, ভাগ্যিস ওরা ডেকেছিল। নাহলে হয়তো আমি মারাই যেতাম।

 রবিবার বোনের বাড়িতেই রাত কাটান। কিন্তু কতদিন চলবে? কতদিন থাকতে দিবে পরিজনেরা। আঞ্জুরা বেওয়া বলেন, “বাড়িতে একা থাকি। চেয়ে চিন্তে চলে কোনোরকম। স্বামী হারা প্রায় বছর কুড়ি। তারপর থেকেই একা। মাটির ঘর টুকু করেছিলাম। তারপর আর পেরে উঠিনি। এখন বৃষ্টিতে ঘর ভেঙ্গে নিরুপায়। ভোটের আগে দশ দিন ধরে ঘুরপাক করেছিল মেম্বারেরা। এখন ঘর ভেঙ্গে গেছে তো একবারও আসেনি। এমনকি ডেকেছি অনেকবার তিনি আসেননি। যদি কোনরকম একটা ঘর পাওয়া যেত তাহলে আমি বসবাস করতে পারতাম”।

স্থানীয় প্রতিবেশী বাখেলা বেওয়া বলেন, “শুধু আঞ্জুরায় নয়, নরজপুর মিঞা পাড়ার অনেকেরই বাড়িতে হাঁটু জল জমেছে। তাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। তবে আঞ্জুরার বাড়িটা ভেঙ্গে যাওয়াতে ওর একটু বেশীই কষ্ট হচ্ছে।”

 এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য মাইনুল ইসলাম বলেন, “আমরা কি আর করব। প্রধানকে জানানো ছাড়া কিছু করার নেই। ওর বাড়ি যায়নি ঠিকই কিন্তু খোঁজ নিয়েছি। সত্যিই আঞ্জুরা খুব দুর্দশায় ভুগছেন। চেষ্টা করছি কিছু করা যায় কি না।”

 ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রায়পুর পঞ্চায়েত প্রধান মিনা বিবি বলেন, “আমি বিষয়টি জানতামই না। ব্যাপারটা গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই সমাধান হবে।”

Latest articles

Related articles