গত শনিবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সমঝোতাকে “সাহসী পদক্ষেপ” আখ্যা দিয়ে উভয় দেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন তিনি।

গত ৬ মে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের কয়েকটি এলাকায় ভারতের “অপারেশন সিন্ধু” পরিচালনার পর দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সম্পর্কে তীব্র উত্তাপ ছড়ায়। এপ্রিলে পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার জবাবেই এই অভিযান চালায় ভারত। তবে, গত শনিবার দুপুরে যৌথ ঘোষণায় দুই দেশের সেনাবাহিনী লাইন অব কন্ট্রোলে (এলওসি) যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে সম্মত হয়। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রণালয় জানায়, বিকেল ৫টা থেকে এই চুক্তি কার্যকর হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প “ট্রুথ সোশাল”-এ লেখেন, “ভারত ও পাকিস্তানের নেতারা লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচাতে সংঘাত থামিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তাদের এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয়।” তিনি এখানে মার্কিন ভূমিকার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে আমেরিকা সহায়ক হতে পেরে গর্বিত। কাশ্মীর ইস্যুর সমাধানে এক হাজার বছরও লাগলেও আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।”

মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, গত দুই দিন ধরে উপ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভান্স ও তিনি নিজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, দুই দেশের সেনা প্রধানি ও নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সাথে যোগাযোগ করে সংঘাত নিরসনে চাপ প্রয়োগ করেন। রুবিও বলেন, “উভয় পক্ষের সম্মতিতে শান্তি আলোচনার পথ প্রশস্ত হয়েছে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চলমান আর্থিক সংকট ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতও এলওসিতে ক্রমাগত উত্তেজনায় ক্লান্তি দেখাচ্ছে। তবে, কাশ্মীর ইস্যুতে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব ভারতের ঐতিহ্যবাহী অবস্থানের বিপরীতে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের প্রেক্ষাপটে নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।

বর্তমানে দুই দেশের সীমান্তে শান্তি থাকলেও কূটনৈতিক স্তরে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের দাবি উঠেছে বৈশ্বিক মহলে। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই ইস্যুতে আলোচনার কথাও ভাবছে মার্কিন প্রশাসন।