এনবিটিভি, কৃষ্ণগঞ্জঃ হলুই গান বা হোলবোল গান বাংলার প্রাচীন লোক গীতি। জানা যায় হলুই গান বা হোলবোল গান এর প্রচলন হয়েছিল নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জে। এলাকার বাসিন্দা অজিত ঘোষের হাত দিয়ে।
আগেকার দিনে রাখল বালকেরা মাঠে গরু চরানোর সময় বিভিন্ন গান বাঁধত। এরপর সন্ধ্যার সময় গরুকে গোয়ালে ঢোকানোর পর তারা খোল, করতাল নিয়ে বেড়িয়ে পড়ত পাড়ায় পাড়ায়। এরপর বাড়ি বাড়ি গিয়ে গান শোনাতো আর তার পরিবর্তে সংগ্রহ করতো চাল, ডাল, আলু ও সবজি, তেল, নুন ইত্যাদি। সাধারণত তারা সারা পৌষ মাস ধরে এটা করত। এরপর পৌষ মাসের শেষ ও মাঘ মাসের শুরুতে তারা গ্রামের মাঠের মধ্যে সবাই মিলে বনভোজন করে খেত।
তাদের এই গানের মধ্যে থাকতো কৃষ্ণ রাধার প্রেমের কথা ও বিভিন্ন লোক গল্পের কথা। গ্রামের লোকের মন জয় করার জন্য তৈরি করতো বিভিন্ন প্রবাদ কথাও যেমন, ‘যে দেবে কাটা কাটা তার হবে সাত বেটা ইত্যাদি। কিন্তু আজ এই লোক সংস্কৃতি বিলুপ্তির পথে।
নতুন প্রজন্ম পছন্দ করেনা এসব গান। কিন্তু এই লোক ঐতিহ্য ধরে রাখতে আজও পৌষ মাসের শুরুতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গান করেন শিল্পী নিত্য গোপাল দাস ও তার সঙ্গী সাথীরা। তাদের কথায় তারা এইবার তাদের গানে তুলে ধরেছেন করোনার সচেতনতার কথা। আর এই করোনা বিধি মাথায় রেখেই তারা মাত্র কয়েক জন মিলেই করবে এই বনভোজন উৎসব।
সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সাহিত্যিক তাপস কুমার মিত্রর মতে, আধুনিক সমাজের কিছু মানুষ এখনও আছে যারা তাদের পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্য ও লোক সংস্কৃতি ধরে রাখতে চায়। তাদের এহন প্রয়াসকে কুর্নিশ জানায়। লোক সংস্কৃতি ভালোবেশে তার অতীত ইতিহাস চিনিয়ে দেওয়াটা রাখল বালকেরা করে চলেছে। এই প্রাপ্তি সমাজের কাছে বড় পাওনা।