মালদহের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল দশা, সর্পের বাস, নেই কোন নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20200727-WA0005

সফিকুল আলম, এনবিটিভি,মালদা: দীর্ঘ ৮ বছর ধরে মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ ভাকুরিয়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির বেহাল দশা। রশিদপুর,উত্তর ভাকুরিয়া,দক্ষিণ ভাকুরিয়া,কাওয়াডোল ও তাঁতিপাড়া সহ পাঁচটি গ্রামের লোকজনের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। একদিকে রয়েছে ফুলহর নদী ও অন্যদিকে রয়েছে বিহার সীমান্তের শাখানদী,তারই মাঝে রয়েছে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় প্রতিদিন শত শত রোগী আসে এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে,কিন্তু চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ না পেয়ে তাদের যেতে হচ্ছে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ! এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য একজন এমবিবিএস ডাক্তার বরাদ্দ থাকলেও এখনও পর্যন্ত তাঁর দেখা পাননি রোগীরা। তবে বর্তমানে নানা সমস্যার কারণে কোন সেবাই পাচ্ছেন না রোগীরা।

দ্বিতল ঘরটিতে একটু বৃষ্টি হলেই মেঝেতে জল জমে থাকে। ওষুধ রাখার আসবাবপত্রগুলোরও বেহাল দশা। নেই কোনো বেডের ব্যবস্থা। রোগী আসলে মেঝে অথবা বেঞ্চে শুইয়ে রাখা হয়। এক কথায় উপসাস্থ্য কেন্দ্রটির ভেতরে চিকিৎসার কোন পরিবেশ নেই বললেই চলে। এছাড়াও এখানে অ্যান্টিবায়োটিক ও আয়রন ট্যাবলেট ছাড়া আর কোনো ওষুধ সরবরাহ হয় না ।

পুনরায় বিল্ডিং নির্মান,আসবাবপত্র মেরামত, চিকিৎসা সেবার মান উন্নতসহ বরাদ্দকৃত এমবিবিএস ডাক্তারের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন রোগী ও এলাকাবাসী। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে বর্তমানে সাপের বাস।

স্থানীয় বাসিন্দা মন্টু যাদব বলেন ১২ বছর আগে এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি তৈরি হয়েছে কিন্তু এখানে কোনো সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় না। আজ পর্যন্ত কোনো ডাক্তারেরও দেখা মেলেনি,তবে মাঝে মধ্যে নার্স আসতো প্রথম দিকে কিন্তু এখন সপ্তাহে এক দিন আশা কর্মীরা এসে মেয়েদের কিছু আয়রন ট্যাবলেট সহ ঔষধ দিয়ে চলে যায়। চারিদিকে জল রাত্রি বেলা কারো কিছু হলে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই। দ্বিতল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির নীচ তলার মেঝে ফেটে গেছে,সেখানে এখন সাপের বাস বলে জানান স্থানীয় ওই যুবক।

দক্ষিণ ভাকুরিয়ার বাসিন্দা অনুজ মণ্ডল বলেন
নেতারা ভোটের সময় আসে আর প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে যায়।সরকার পাল্টালেও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিয়ে কেউ কিছু ভাবেন না।

দক্ষিণ ভাকুরিয়া গ্রামের মেম্বারের স্বামী অবনী সাহা ও ইসলামপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুষমা মণ্ডল বলেন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিয়ে আমরা বিডিও বিএমওএইচ, সিএমওএইচ ও ডিএম কে জানিয়েছি। তবে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিয়ে কেউ কোনো কর্ণপাত করেননি।

হরিশ্চন্দ্রপুর ২‌ নং ব্লকের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তজমুল হোসেন বলেন- তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যাটির সমাধান করার জন্য বলেছেন।

বিএমওএইচ সাগর বসাক জানান এই নিয়ে এলাকার মানুষরা তার ‌কাছে এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করেনি। তবে এলাকার স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে তিনি বিষয়টি জেনেছেন।

হরিশচন্দ্রপুর-২ নং ব্লক এলাকায় যতগুলো স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে তাদের বেশিরভাগেরই দ্রুত পরিকাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। বিএমওএইচ সাগর বসাক উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে সমস্যাগুলির সমাধান করার আশ্বাস দেন।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর