মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নতুন ভাবনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের,দিল্লি যাচ্ছেন না

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

3dexmumq5njiic6a_1622221141

গত শুক্রবার ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন্যাকবলিত এলাকা আকাশপথে পরিদর্শন করতে পশ্চিমবাংলায় আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী রাজ্য সফরে এসে কলাইকুন্ডা বিমানঘাঁটিতে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এমনকি বৈঠকের পর প্রধামন্ত্রীর সাথে মুখ্যমন্ত্রী দেখা করলেও মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা করেননি । ঠিক এই কারনেই কেন্দ্রের কর্মীবর্গ মন্ত্রক থেকে চিঠি পাঠিয়ে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কে দিল্লিতে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। আর এই চিঠিকে কেন্দ্র করেই একের পর এক সুর চড়াতে থাকেন রাজনৈতিক নেতা নেত্রীরা।

খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রের এই বদলির সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বলেছেন মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা কেনো? প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন আমার পা ধরো বাংলার মানুষদের সহযোগিতা করব। তাও আমি করতে রাজি। কিন্তু আমাকে অপমানিত করবেন না।” নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই প্রসঙ্গ টেনেই পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তিনি জানান প্রধানমন্ত্রীর পা ধরতে হবে না,আপনি প্রধানমন্ত্রীকে প্রাপ্য সম্মান দিন। আইএএস আইপিএস দের প্রোটোকল ভাঙতে আপনি বাধ্য করেন। এক কথায় বলে রাখা ভালো আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এর দিল্লি তলব নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে কটাক্ষ পাল্টা কটাক্ষ তুঙ্গে।

মুখ্যসচিবের দিল্লি তলব কতটা আইন সঙ্গত?

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৩ আইপিএস অফিসারকে দিল্লিতে তলব করা নিয়ে ঠিক ৫ মাস আগে তুঙ্গে উঠেছিলো সংঘাতের রাজনীতি। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে তলব নিয়ে কেন্দ্র রাজ্য একই ভাবে বিবাদে জড়িয়ে পরে। প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার এবং রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব অর্ধেন্দু সেন এর মন্তব্য প্রশাসনের কাজ হওয়া দরকার যুক্তিযুক্ত ভাবে। যখন কোভিড ও দুর্যোগ মোকাবেলায় রাজ্য সরকার ব্যস্ত ,সেই সময় কেন্দ্রের মনে হয়েছিলো যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের শীর্ষে থাকা দরকার। ঠিক সেই কারণেই তার চাকরীর মেয়াদ ৩ মাস বাড়ানো হয়।

তারপরেও যদি কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের পক্ষ থেকে মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে তলব করে তাহলে এই বিষয়টা অযৌক্তিক ও বেআইনি কাজ। সূত্রের খবর, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে আলোচনাক্রমে এগ্রি লিস্ট করা হয় এবং এই এগ্রি লিস্ট থেকেই অফিসারদের স্মারকলিপি পাঠানো হয় আর এই বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে অসমত হলে কেন্দ্রের নির্দেশই মানতে হবে। অন্যদিকে কোনো অফিসারকে রাজ্য সরকার রিলিজ না করে,সে ক্ষেত্রে এটা শুধু অশোভনীয় নয়,এটা আইন বিরুদ্ধও। অনেকের মতে ,মুখ্যসচিব প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, তাকে নিয়ে এই ধরনের রাজনীতি এর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।

দিল্লি কি যাচ্ছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়?

১৯৮৭ সালের আইএএস অফিসার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে আগামী ৩১ এ মে সকাল ১০ টায় যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নয়াদিল্লির নর্থ ব্লকে কর্মীবর্গ ও প্রশিক্ষণ দপ্তরে যোগ দেওয়ার কথাও বলা হয় মুখ্যসচিবকে। নবান্ন সূত্রে খবর, সমস্ত প্রধান সচিবদের নিয়ে সোমবারই বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকে থাকবেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে তার দিল্লি যাওয়া হচ্ছে না। এককথা অবশ্য সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী তার কিছুটা ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য বিষয়, ঘূর্ণিঝড় ও কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে যখন ব্যাস্ত রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক সেই সময় কেন্দ্রের তরফ থেকে মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে বদলির নির্দেশে বেশ আলোড়ন পরে যায় রাজনৈতিক মহলে। এখন দেখার বিষয় দিল্লি কি যাচ্ছেন মুখ্যসচিব? না কি সচিবদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়,সেটি এখন দেখার বিষয়।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর