
ঢাকা, বাংলাদেশ – শরিয়া আইনের সাথে সাংঘর্ষিক বলে দাবি করে নারীদের জন্য প্রস্তাবিত সম-অধিকার সংস্কারের বিরুদ্ধে শনিবার রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটে আয়োজিত এই সমাবেশে ২০ হাজারেরও বেশি সমর্থক অংশ নেন, যাদের অনেকেই হাতে ধারণ করেছিলেন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার – যেখানে লেখা ছিল, “নারীর উপর পশ্চিমা আইন চাই না, জেগে উঠো বাংলাদেশ”।
সমাবেশে হেফাজত নেতারা বলেছেন, সরকারের প্রস্তাবিত আইন পরিবর্তন (বিশেষত সম্পত্তিতে নারীর সমাধিকার) ইসলামী বিধান লঙ্ঘনের শামিল। তাদের দাবি, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান সমাজের মূল্যবোধ ও ধর্মীয় নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ আইনই প্রণয়ন করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করতে গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন আইনি সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে সম্পত্তি উত্তরাধিকার, বিবাহ-তালাক ও নারী নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য। তবে হেফাজতের মতো রক্ষণশীল গোষ্ঠীরা এটিকে “পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুকরণ” বলে আখ্যা দিয়ে তীব্র বিরোধিতা করছে।
সমাবেশস্থলে এক সমর্থক বলেন, “ইসলাম নারীর মর্যাদা দিয়েছে, কিন্তু এই আইন পরিবার কাঠামোকে নষ্ট করবে।” অপরদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করে, ধর্মীয় ব্যাখ্যার নামে নারীর আইনী স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকারের জন্য এই ইস্যুটি সংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারে। হেফাজতের এই বিক্ষোভ ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় তাদের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করার চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের সংবিধানে নারীর সমানাধিকার স্বীকৃত হলেও বাস্তবে এর প্রয়োগ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সরকার প্রস্তাবিত সংশোধনীর খসড়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে এরইমধ্যে এটি সামাজিক-রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।