পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল ছাড়লেন হুগলীর বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

295972027_3307030499626815_2669398744820653035_n

পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসকদলের জন্য বড়ো ধাক্কা। তৃণমূল ছাড়লেন হুগলীর বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এমনকি বিধায়ক পদ থেকেও সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন এই প্রবীণ নেতা ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক। পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট বিলি নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে ফেসবুক পোস্টে তিনি জেলার নির্বাচন কমিটি এবং দলের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এই পোস্টে প্রবীণ মনোরঞ্জন বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেও জানান, আর্থিক কারণে তা এখনও ছাড়ছেন না। পুরনো চাকরিস্থল থেকে পেনশন আদায় করতে পারেনি। পেনশন পেলেই বিধায়ক পদ ছেড়ে দিতে দ্বিধা করবেন না বলেও জানান বলাগড়ের এই নেতা।

পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট বিলিকে কেন্দ্র করে জেলায় জেলায় তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসছে প্রায় প্রতিদিনই। ভোটে প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে দলের সিদ্ধান্তর দিকে আঙুল তুলেছেন বলাগড়ের বিধায়ক। তিনি লেখেন, প্রিয় বলাগড়বাসী ও জেলা সহ তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বকে এই পোষ্টের মাধ্যমে জানাই, আমাকে দল দুটি পদ দিয়েছিল। ২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচন কমিটির সদস্য, হুগলী জেলা (জোনাল ৬)। ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পদ। উক্ত দুটি দলীয় পদ থেকে ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করলাম।

তিনি আরও লেখেন, বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু যেহেতু আগে আমি একটি চাকরি করতাম, নির্বাচনে দাঁড়াবার জন্য সেটি ছাড়তে হয়েছিল! দু বছরের অধিক সময় হয়ে গেল পঞ্চাশ বার ছোটাছুটি করেও যার পেনশন ও গ্রাচুইটির কিছু পাইনি, তাই এই মুহূর্তে বিধায়ক পদ ছাড়তে পারছি না। বলেন, বিধায়ক পদ ছেড়ে দিলে খাবো কী? যেদিন পেনশন আরম্ভ করবে সেদিন এই পদ থেকেও সরে দাঁড়াব। এতদিনে বুঝতে পেরেছি এই রাজনীতি আমার মতো মানুষের জন্য নয়।সবাইকে ধন্যবাদ ও নমস্কার।

এখানেই থেমে থাকেননি মনোরঞ্জন। সেই পোস্টের কমেন্ট সেকশনে তিনি লেখেন,”এই মাত্র হাতে এল সদ‍্য প্রকাশিত ওড়িয়া ভাষায় অনুদিত আমার একটি বই। এই আমি, এই আমার আসল পরিচয়। আসল স্থান।” এই মন্তব্য থেকেই পরিস্কার, রাজনীতিতে এসে তিনি খুশি ছিলেননা। তিনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন রাজনীতির ময়দানে নয়, পাঠকদের জন্য বই লিখতে৷

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে হুগলীর বলাগড়ে তৃণমূলের হয়ে জয়ী হন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। ১৯৫০ সালে বাংলাদেশের বরিশালে জন্ম তাঁর। তারপর এপার বাংলায় এসে বিখ্যাত লেখক হয়ে ওঠেন। সঙ্গে করছিলেন একটি চাকরিও। শেষ বয়সে রাজনীতিতে নেমে একেবারে বিধায়ক হয়ে যান মনোরঞ্জন। বিধায়ক হওয়ার ২ বছর পর দুই গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়লেন তিনি। এমনকি বিধায়ক পদ ছেড়ে রাজনীতি থেকেও বিদায় নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন তৃণমূলের এই নেতা। তবে যতদিন চাকরির পেনসন না পাচ্ছেন, ততদিন বিধায়ক পদ থেকে সরবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মনোরঞ্জন।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর