নিউজ ডেস্ক : মুকুল রায় এবার কি সত্যিই আবার তৃণমূলের পথে? বাড়ল গুঞ্জন। গতকাল মুকুল পত্নীকে দেখতে অভিষেকের হাসপাতালে যাওয়ার পর বিজেপি শিবিরেও বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিস্তর অস্বস্তি। আর সে কারণে মুকুলকে বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করা আটকাতে তাকে আজ সকালে ফোন করলেন স্বয়ং মোদি। বেলা ১০ টায় ২ মিনিটের একটু বেশি সময় ধরে মুকুলের সঙ্গে কথা বলেন মোদি। বিজেপি সূত্রে বলা বলা হয়েছে মোদি মুকুল পত্নীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে ফোন করেছিলেন। তবে এই ফোনের রাজনৈতিক তাৎপর্য অনেক এবং তা সুস্পষ্ট।
বিজেপি শিবিরে শুভেন্দু ছাড়া বহু প্রাক্তন তৃণমূল নেতা এখন ঘর ওয়াপসীর দিকে ঝুঁকে আছেন। এই দলে নাম রয়েছে গত লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গে বিজেপির ঈর্ষণীয় পারফরমেন্সের নায়ক মুকুল এবং তার পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের, মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে মোদি নিজে তাকে ফোন করায় সত্যি বিজেপি যে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মমতাকেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে ভাবছে সেটা পরিষ্কার হয়ে গেল।
করোনা আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই বাইপাশের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়ের স্ত্রী। বর্তমানে তাঁর অবস্থা বেশ সঙ্কটজনক। গতকাল তাঁকে দেখতে হঠাৎই ওই হাসপাতালে যান যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তখন হাসপাতালে ছিলেন না মুকুল রায়। তাঁর পুত্র তথা বিজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের কথা হয়। বিষয়টিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি রাজ্য রাজনীতিতে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাতে না যায় তার জন্য রাতে মুকুল রায়ের স্ত্রীকে দেখতে হাসপাতালে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। তারপরও অবস্থা খারাপ বুঝে মুকুলকে কাছে টানতে ফোন মোদির।
গতকাল অভিষেকের হাসপাতাল সফরের পর থেকেই তার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার গুঞ্জন বৃদ্ধি পেয়েছে রাজনৈতিক মহলে। উল্লেখ্য এর আগে মুকুলের সঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে কোনরকম সখ্যতা দেখায়নি তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। আবার বিধানসভা ভোটে নিজের নারাজি সত্বেও তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়। তারপরেও তার পরিবর্তে তার থেকে বহু পরে বিজেপিতে যোগ দান করা শুভেন্দু কে বিরোধী দলনেতা করা হয়। এই সব ব্যাপারে মুকুলের প্রতিক্রিয়া ছিল, ” কখনো কখনো মানুষকে চুপ করে থাকতে হয়। যা বলার সময় হলে বলব।” তারপর থেকে সংবাদ মাধ্যমের সামনে আসতে দেখা যায়নি তাকে। অন্যদিকে মুকুল পুত্র নির্বাচনের পর তৃণমূলের বিরুদ্ধে তেমন কিছুই বলেননি বরং তৃণমূল স্তুতি শোনা গিয়েছে তার গলায়। উল্টে তিনি বিজেপিকে উপদেশ দিয়েছেন নির্বাচিত একটা সরকারের সমালোচনা করার ব্যাপারে। এই সব কিছুই একটা নির্দিষ্ট দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধরা। আর তা হল বাপ ব্যাটার বিজেপি ত্যাগ এবং তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন। তবে আসলে ঠিক কি হতে যাচ্ছে তা জানতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।