নিউজ ডেস্ক : রাজ্যসভা থেকে আজ অবসর গ্রহণ করলেন কংগ্রেসের বহুদিনের পুরনো নেতা এবং জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ। বিদায় কালে তাকে অবসর জীবনের জন্য শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান সহ সভায় উপস্থিত অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। মোদী তার ভাষণে বলেন, গোলাম নবী আজাদ সব সময় সঠিক ভাষায় কথা বলেন, বলতে গেলে তিনি আমার বন্ধুর মতো। তার জন্য আমাদের দরজা সব সময় খোলা থাকবে। অবশেষে গোলাম নবী আজাদ তার বক্তৃতায় বিজেপি নেতাদের সুরে সুর মিলিয়ে মুসলিমদের বর্তমান অবস্থার জন্য মুসলিমদের দায়ী করেন এবং উগরে দেন পাকিস্তান বিদ্বেষ। তিনি বলেন মুসলিমরা একে অপরের সঙ্গে লড়াই করছে যেখানে হিন্দু খ্রিস্টান ও নেই।
তিনি বলেন, আমি সেইসব ভাগ্যবান এর মধ্যে একজন যে কোনদিন পাকিস্তান ভ্রমণ করেনি। তবে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে যা পড়েছি তাতে আমি ভারতীয় মুসলিম হিসেবে গর্ববোধ করি।
নেটিজেনদের মধ্যে একাংশ তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে সম্প্রতিককালে বৃদ্ধি পাওয়া মুসলিমদের বিরুদ্ধে মব লিঞ্চিং, মিডিয়া ট্রায়াল এবং বাবরি মসজিদের কথা তুলে ধরেন। রয়টার্স এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে মোদি সরকারের আগমনের পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারতে মোট ৭৮ টি মব লিঞ্চিং এর ঘটনা হয়েছে যেখানে হিন্দুত্ববাদীরা অসহায় মুসলিমদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে। ঘটনা গুলিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৪ জন নিরীহ মুসলিম, আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
তিনি বিশ্বের অন্যান্য সমস্ত জায়গায় মুসলিমরা একে অপরের সঙ্গে লড়াই করছে বলে উল্লেখ করে বলেন, আমরা দেখেছি আফগানিস্তান থেকে ইরাক কিভাবে ধ্বংস হয়েছে। সেখানে হিন্দু খ্রিস্টান কেউ নেই তারা নিজেদের মধ্যে লড়াই করে যাচ্ছে। যদি সারা পৃথিবীতে কোথাও মুসলিমদের জন্য জান্নাত থেকে থাকে সেটি হলো ভারত।
আজাদের এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন বহু নেট নাগরিক। অনেকে বলেছেন আজাদের ভূ-রাজনৈতিক জ্ঞানের অভাব রয়েছে। না হলে তিনি কীভাবে ইরাক এবং আফগানিস্তানের পশ্চিমা শক্তির অনুপ্রবেশের প্রকৃত কারণ ভুলে গেলেন। উল্লেখ্য ইরাক এবং আফগানিস্তানে আমেরিকা ও রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের পূর্বে ক্ষুদ্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অন্যান্য বিভিন্ন দেশের মতো থাকলেও কোনদিন সেই অর্থে সন্ত্রাসবাদি ঘটনা লক্ষ্য করা যায়নি। অনেকে আবার বলেছেন, শেষ দিনে তিনি নিজের পরবর্তী জীবনে সরকারের প্রিয় পাত্র হবার জন্যই এমন বার্তা দিয়ে গেলেন। মোদি সরকারের অস্বস্তি দূর করতে তিনি এমন বার্তা দিয়েছেন আর এজন্যই তার বিদায়ে অশ্রু সিক্ত অবস্থায় দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে।