এনবিটিভি ডেস্কঃ প্রখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত, বিভিন্ন বইয়ের লেখক এবং জামায়াতে ইসলামী হিন্দের অন্যতম নেতা মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ ইসলাহী মঙ্গলবার ইন্তেকাল করেন। বেশ কিছুদিন অসুস্থতার পরে নয়ডার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে, অবশেষে আজ প্রায় ৭৯ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।
মাওলানা ইউসুফ ইসলাহী ১৯৩২ সালের ৯ই জুলাই ফরমালি জেলা আটকে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন উত্তরপ্রদেশের বেরেলি থেকে। তিনি মাজাহির উলূম সাহারানপুর থেকে ইসলামিক স্টাডিজ ও মাদরাসাতুল ইসলাহ সারাই মির থেকে উচ্চতর শিক্ষা এবং ফজিলত শিক্ষা লাভ করেন। তিনি কুরআন মুখস্থ করেছিলেন এবং তাজবীদও শিখেছিলেন।
তিনি মাওলানা আখতার আহসান ইসলাহীর সান্নিদ্ধে চার বছর অতিবাহিত করেন এবং বিশিষ্টতার সাথে হাদিস বিষয়ক জ্ঞান সনদ ফজিলত লাভ করেন। মুহাম্মদ ইউসুফ ইসলাহীর প্রায় চার দশক ধরে “জিকরা জাদীদ” জনপ্রিয় ম্যাগাজিনের সম্পাদনা করেছেন। তিনি ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে ৬০টিরও বেশি বই লিখেছেন এবং তা প্রকাশও করেছেন। তন্মধ্যে অন্নতম হল, আদাবে জিন্দেগী (ইসলামে জীবনের শিষ্টাচার), আসান ফিকহ (প্রতিদিনের ফিকাহ), কুরআনী তালিমাত, সুরা-ই-ইয়াসীন, সুরা-ই-সাফ, তাফীমুল হাদীস, গুলদাস্তা-ই-হাদিস, ইসলামী মুশরাহ, হুসনে মুশরাত সহ আরও অনেক গ্রন্থ। দাই-ই-আজম ও রওশন সিতারে তাঁর সর্বাধিক পঠিত রচনা।
প্রসঙ্গত, তার অনেক বই ইংরেজি, হিন্দি ও অন্যান্য ভাষায় অনূদিত ও প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ২৫ বছর বয়সে জামায়াত-ই-ইসলামী হিন্দের সদস্য হন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অর্পিত হন। তিনি গত পাঁচ মেয়াদে মারকাজী মজলিস শুরার (কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটি) সদস্য হিসাবে নিযুক্ত হন। এছাড়াও তিনি অনেক শিক্ষা ও কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনা করছেন। তিনি জামেয়া তুস সালেহাত, রামপুরের নাজিম (প্রেসিডেন্ট) ছিলেন। মেয়েদের জন্য উচ্চতর আরবি ও ইসলামী শিক্ষার জন্য একটি অনন্য এবং খুব পরিচিত প্রতিষ্ঠান খোলেন। মারকাজী দরসগাহে ইসলামী, রামপুরও গত কয়েক বছর ধরে তার নির্দেশনায় চলছিল। আরও বেশ কিছু শিক্ষা ও কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানও তার কাছ থেকে পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা চেয়েছে।
উল্লেখ্য, এছাড়াও তিনি ইসলামিক সার্কেল অফ নর্থ আমেরিকার (ICNA) প্রকল্প WhyIslam ( কেন ইসলাম?)- এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এবং দাওয়াহের জন্য প্রতি বছর কয়েক মাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কাটাতেন।
অবশেষে মঙ্গলবার এই মহান ব্যাক্তির পরলোকগমন করেন। তাঁর ইন্তেকাল সংবাদ শুনে হাজারও মানুষের জীবনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করে বলেন, আমরা এক মহান ব্যক্তিকে হারিয়ে ফেললাম, তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করা খুবই কঠিন।