সাদিকুলের হস্তক্ষেপে মৃত্যুর ৫২ দিন পর ঘরে ফিরল বাগনানের পরিযায়ী শ্রমিকের নিথর দেহ

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG_20211207_203906

সাবিবুর খান, কলকাতাঃ সৌদি আরবে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে গিয়ে চলতি বছরের ১৬ অক্টোবর পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় হাওড়ার বাগনানের বাসিন্দা রাজিবুর রহমানের। কিন্তু মৃতদেহ কিভাবে ফিরবে দেশে , তা নিয়ে ঘোর অনিশ্চিয়তায় দিন কাটছিল রাজিবুরের পরিবারের।

রাজিবুরের লাশ ঘরে ফেরাতে পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় বিশিষ্ট সমাজকর্মী সাদিকুল ইসলামের সঙ্গে। তারপরই তিনি পুরো দায়িত্ব তুলে তুলে নেন নিজের কাঁধে। বিনামূল্যে এই মহান কাজে নেমে পড়েন তিনি। একেবারে পুরোদমে শুরু করে দেন লড়াই।

বিদেশমন্ত্রক, অ্যাম্বাসি এবং কনস্যুলেটের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে থাকেন তিনি। ১৫ দিনের কঠোর পরিশ্রমে ব্যাপারটা ঠিকঠাক এগিয়ে গেছিল। তবে তা হঠাৎ বাধা হয়ে দাঁড়ায় এক অন্য কারণে। সৌদি আরবের কন্ট্রাক্টর দেহ পাঠানোর খরচ ও দায়িত্ব পালন করতে অস্বীকার করায় নতুন করে তৈরি হয় জটিলতা।

এরপরও আশা ছাড়েননি সমাজকর্মী সাদিকুল। সেই কন্ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে সৌদি আরব কোর্টে মামলা করার জন্য এজেন্সিকে অনুরোধ করেন তিনি। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে খরচ বহন করতে রাজি হন ওই কন্ট্রাক্টর। তারপর ৫২ দিন পর রবিবার বাগনানের বাড়িতে ফিরল রাজিবুরের মৃতদেহ।

৫২ দিনের লড়াইয়ের মাঝে মৃতের পরিবারকে সহ্য করতে হয়েছে অসহ্য যন্ত্রণা। সূদুর বিদেশে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে মৃত্যুর পর ঘরের ছেলেকে শেষবারের মতো দেখতে পাবে কিনা সন্দেহ ছিল পরিবারের। আবার নেতাদের কাছে গিয়েও নাকি কোনও লাভ হয়নি। সাদিকুলের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে ৫ ডিসেম্বর দমদম বিমানবন্দরে পৌছায় রাজিবুরের মৃতদেহ। তারপরই মৃতের পরিবারকে লাশ তুলে দেন সাদিকুল। তিনি যেন আল্লাহর ফ্যারেস্তা রুপে রাজিবুরের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

 

এই দীর্ঘ লড়াইয়ে সাদিকুল ইসলামের সঙ্গী ছিলেন তাঁর ভাই সরফরাজ ও দাদা মুজাফ্ফর। করোনা কালে সাদিকুলের টিম সবসময় মানুষের পাশে ছিল। দেশ, বিদেশের নানান প্রান্তে পরিযায়ী শ্রমিক বা কাজ করতে গিয়ে মারা গেলে বিনামূল্যেই তাদের ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে থাকে এই টিম। ভবিষ্যতে আরও এমন ভালো কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন সাদিকুল।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর