~হাফিজুর রহমান, আসোসিয়েট এডিটর, এনবিটিভি
শেরে বাংলা ফজলুল হক তখন অবিভক্ত বাংলার প্রিমিয়ার (মুখ্যমন্ত্রী) সে সময় তার কাছে চাকরি চাইতে এলো এক যুবক। এ অবধি ঠিক ছিল, সমস্য হল তার শিক্ষা নিয়ে। তাকে যা জিজ্ঞাসা করা হয় সে মাথা নেড়ে না বলে , বোঝা গেলো চাকরি প্রার্থী অকাট্মুর্খ। শেষে উপায় না পেয়ে ফজলুল সাহেব মুচকি হেসে বললেন কিছুই যখন জাননা তখন রাজনীতি করে খাও। এটা কৌতুক নয় সত্যি।
এখন দেশের রাজনীতির হাল দেখে ছেলেবেলায় দাদুর মুখের শোনা হক সাহেবের সেই গল্পের কথা মনে এলো। দেশ বেচে দেওয়া বিশ্বগুরু বেচারাম প্রধান নিজ মুখে বলেছে তার শিক্ষা নেই। পরে আজব দেশের দুই গজব মন্ত্রী দু রকম পাশের কাগজ নিয়ে এলো। একটি কাগজ অনুযায়ী বেচারাম স্নাতক,অন্য কাগজ বলছে বেচা স্নাতকোত্তর। প্রধান একটি ইন্টারভিউ এ বলেছে সে পড়াশোনা করেনি। আর মজার কথা হলো কাগজগুলি কম্পিউটারে প্রিন্টেড। যত দূর জানি তখন রেজাল্ট হাতে লেখা হত। আমাদের সার্টিফিকেটও হাতে লেখা।
বেচা ব্যতিক্রম! হতেও পারে । সে শুধু পোস্ট গ্রাজুয়েট নয়,এমনকি ম্যাট্রিক পাস। কোথায় আমার মত হরিদাস আর কোথায় দেশের ছাতা মাথা। কোথায় রাজা ভোজ আর কোথায় গঙ্গু তেলী। দেশ চলছে একদল অশিক্ষিত হনুর মর্জিতে। ৭০ বছর নাকি কিছু উন্নতি হয়নি। কিন্তু সেই ৭০ বছরে তিলে তিলে জমানো সব সম্পত্তি পৈতৃক সম্পত্তির মত বেচে দেওয়া হচ্ছে, দিনের পর দিন। আইন আদালত কোনকিছুর ধার ধারেনা এরা। হিন্দু মুসলিম করে মন্দির মসজিদ করে লোককে বিভ্রান্ত করে দেশকে খাদের কিনারে ঠেলে দিচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দিচ্ছে। আর তাতে কাজ না হলে ই ডি, আই টি, পুলিশ আছে।
গণতন্ত্র কাকে বলে জানেনা এই ফ্যাসিষ্টরা। তাই ভোটে হেরেও নির্বাচিত সরকার ফেলতে
এজেন্সির অপব্যবহারে করে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটকের মত একের পর এক রাজ্য দখল করতে চায় এই মনুষ্যতররা। বিহারে পিছড়ে বর্গের কুর্মি নেতা আর তেজি যাদব নেতা মিলে মুখে ঝামা ঘুসে দিয়েছে, বাংলায় দিদির হাওয়াই চটির লাথি খেয়ে পালিয়েছে। দিদির কল্যাণে ঝাড়খন্ডের ঘোড়া কেনা বন্ধ।সরকারি গাছে হেমন্তের ফুল ফুটেছে। তেলেঙ্গানায় ভিডিও লিক হয়ে বেকায়দায় হনুর দল। শেষ বোম ফাটিয়ে দিয়েছে হিল্লি দিল্লির মাথা বারোমাস। খাসিলালকে রীতিমত চমকানো হয়েছে। দিল্লির লাড্ডু যত খুশি খাও কিন্তু গুজিয়াতে পা রাখা চলবেনা, গেলে তার ডেপুটিকে গারদে ভরা হবে হুমকি এসেছে। বারোমাস খাসিলাল দিয়েছে হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে। দু কান কাটা লজ্জাহীন কোনও জবাব না দিয়ে বাহারি টুপিতে মুখ ঢেকে গুজিয়াতে পালিয়েছে। গুজিয়া আর হিমালয় চল এ ভোটের পর অপারেশন বাংগাল। আসাম বিহার আর বাংলার উত্তুরে অংশ নিয়ে নতুন রাজ্য গড়তে হবে। এতে দিদি আর বিহারি গোয়ালার তেল ঝরবে!। বিহার আর বাংলাকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে।
ছলে বলে কৌশলে এক দেশ, এক ভাষা, একদল করতে হবে তাহলে বিশ্বগরু হওয়া ঠেকাই কে। শুরু করেছিলাম অতীতে ঘটা একটি ঘটনা উল্লেখ করে ,শেষ করছি একটি সাম্প্রতিক খবর দিয়ে। আমার ভাগ্নে কলকাতার নামী স্কুল আর কলেজে পড়েছে। ছাত্র হিসেবে দুর্দান্ত,সবাই যখন ভাবছে ছেলেটি বাবা মা আর বংশের নাম উজ্জ্বল করবে। তখন সবাইকে অবাক করে সে জানিয়ে দেয় ইচ্ছে করলে সে আমলা হতে পারে। কিন্তু আইএএস বা আইপিএস হয়ে অশিক্ষিত নেতাদের স্যালুট ঠোকার বদলে সে বাচ্চাদের মানুষ হবার শিক্ষা দেবে। নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা না ভেবে এরকম একটি সিদ্ধান্ত নেওয়াই সবাই ওকে পাগল বলছিলো, আমি বলিনি কারণ জানি এরকম পাগলরা আছে বলেই……