হরিশ্চন্দ্রপুরে কাটমানি নেওয়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল, ভিডিওর সত্যতা অস্বীকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

VideoCapture_20210626-150621

সারদা কাণ্ডের ছায়া এবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে।কাটমানি নেওয়ার গোপন ক্যামেরা বন্দী ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যে ভাইরাল।হাতেনাতে ধরা পড়লেন একশো দিন মাটি কাটা প্রকল্পের সুপার ভাইজার গোপাল মন্ডল ও পঞ্চায়েত সদস্যার দেওর রতন সাহা।ভিডিওতে পরিষ্কারভাবে টাকা নিতে দেখা যাচ্ছে সুপারভাইজার গোপাল মন্ডল নিজের বাড়িতে উপভোক্তাদের ডেকে কাটমানি নিচ্ছে।পাশে বসে রয়েছে পঞ্চায়েত সদস্যার দেওর রতন সাহা।

যদিও ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজ মানতে নারাজ পঞ্চায়েত সদস্যা রুম্পা সাহা ও তার স্বামী উত্তম সাহা।ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের গাররা-চন্ডিপুরা বুথে।

পঞ্চায়েত সদস্যা রুম্পা সাহা,স্বামী উত্তম সাহা, দেওর রতন সাহা ও সুপার ভাইজার গোপাল মন্ডল সহ মোট চারজনের নামে শুক্রবার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন উপভোক্তার একাংশ।

অভিযোগ,সরকারি আবাসন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জিও ট্যাকিং এর সময় কয়েক দফায় ১০-১৫ হাজার করে কাটমানি নিয়েছে রুম্পা সাহা ও তার ঘনিষ্ঠরা।যদিও টাকা নেওয়ার অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে দাবী তৃনমূল পঞ্চায়েত সদস্যা ও তার স্বামীর।গ্রামে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে তার দলেরই একাংশের ষড়যন্ত্রের শিকার বলে সাফাই গাইছেন অভিযুক্ত সদস্যা।কাটমানি দিয়েও সরকারী আবাস যোজনার তালিকায় নাম নেই অনেকের। টাকা ফেরত চাইতে গেলে পঞ্চায়েত সদস্যা ও তার ঘনিষ্ঠদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে।এখন আবার আঁধার লিঙ্ক করানোর পাশাপাশি ও নতুন জব কার্ড তৈরি করার জন্য উপভোক্তাদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা দাবি করছে। টাকা না দিলে তালিকা থেকে নাম জো বাদ দিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিচ্ছে বলে জানান। অথচ সরকারি নিয়মে বিনামূল্যে জব কার্ড তৈরি করার নির্দেশ রয়েছে।

মোহাম্মদ আজাদ নামে অভিযোগকারী বলেন,” পঞ্চায়েত সদস্যা,তার স্বামী,দেওর এবং সুপারভাইজার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে জিও ট্যাকিং এর সময় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে কাটমানি নিয়েছে।এখন ঘরের তালিকায় অনেকের নাম আসলেও বাদ পড়েছে অনেকেরই।আমার নাম আসেনি।আমি টাকা ফেরত চাইতে গেলে হুমকি দিচ্ছে।তাই ব্লকে অভিযোগ জানালাম।”

দিলশাদ রাজা নামে এক অভিযোগকারী বলেন,”প্রথমে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা নেই।তারপর এখন তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের কাছ থেকে জব কার্ডের জন্য এক হাজার টাকা‌ করে চাইচ্ছে।না দিলে তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার হুমকিও দিচ্ছে।আর লিস্টে যাদের নাম আসেনি তাদের টাকা ফেরত দিচ্ছে না। গোপাল মন্ডল ও উত্তম সাহার টাকা নেওয়ার ভিডিও ফুটেজ আছে আমাদের কাছে।আমরা অভিযোগ জানিয়েছি।সুবিচার চাই।”

এদিকে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্যা রুমা সাহা বলেন,”এই ধরনের অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।আমি কারোর কাছ থেকে কোনো টাকা নেই নি।কেউ বললে এসে প্রমাণ দেখাক।আমার হয়ে আমার স্বামী কাজ দেখে।আমি যতটা সময় পাই এলাকায় যায়।”

অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী তৃণমূল নেতা উত্তম সাহা বলেন,”এসব বিরোধীদের ষড়যন্ত্র।আমরা কোনো টাকা নিনি।এসব বদনাম করার প্রচেষ্টা।যারা বলছে তাদের প্রমাণ করতে হবে।ভিডিওর সত্যতাও তিনি অস্বীকার করেন।”

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মানিক দাস বলেন, “সংবাদমাধ্যমের থেকে খবরটি জানতে পারলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অঞ্চল নেতৃত্বকে জানানো হবে তদন্তের জন্য। যারা অন্যায় করে দল তাদের পাশে থাকবে না। যা ঘটেছে সেটা জেনে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর