এনবিটিভি, নদীয়া শান্তিপুর :- শান্তিপুর থানার বেলঘড়িয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নিলনগর গ্রাম। এই নীলনগর গ্রামের মোটের উপর ৫০ ঘর বাসিন্দা রয়েছেন। প্রত্যেকেই শ্রমজীবী এবং দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী বাসিন্দারা। এই গ্রামে নেই রাস্তাঘাট, নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা, রাস্তাতে নেই বৈদ্যুতিক বাতি। দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক সমস্যা নিয়েই বসবাস করছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের সমস্যার কথা পঞ্চায়েত প্রধানকে জানিয়েও কোনো সুরাহা পাননি আজও।
৩৪ বছর আগে তৈরি হয়েছিল গ্রামের দুটি ইট পাতা রাস্তা। সেই রাস্তা আজ ভগ্নদশা। বর্ষা আসলেই করুণ পরিস্থিতিতে পরিণতি হয়। স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। নির্বাচনের ঘণ্টা বাজতেই একে একে হাজির হয়ে যায় একাধিক রাজনৈতিক নেতারা। ভোট আদায়ের জন্য চলে মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ঝুড়ি ঝুড়ি বুলি। ভোটের ফল বেরিয়ে গেলে আর দেখা মেলেনা রাজনৈতিক নেতাদের। প্রতি নির্বাচনের সময় একই দৃশ্য দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন গ্রামের বাসিন্দারা। এই গ্রামের মানুষের সমস্যার কথা মাথাতেই আর আনেন না নেতারা। সরকারি আবাস যোজনার প্রকল্প থেকেও বঞ্চিত এলাকার একাধিক মানুষ। বিগত দিনে নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন রাস্তা পানীয় জল আর বৈদতিক আলো প্রতিটি গ্রামে পৌঁছতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণা পর থেকে একাধিক গ্রামে সেই কাজ শুরু হয়ে গেল এখনো শুরু হয়নি বেলঘড়িয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নিলনগর গ্রামে।
এছাড়াও রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী প্রত্যেক গ্রামে মিলছে দুয়ারে রেশন প্রকল্প। দুয়ারের রেশন প্রকল্প থেকেও বঞ্চিত এই নীলনগর গ্রামের বাসিন্দারা। আমরা ছুটে গিয়েছিলাম সেই রেশন ডিলারের কাছে তিনি জানালেন আগামী মাস থেকেই আমরা এই প্রকল্পের কাজ শুরু করব বলেও আশ্বাস দিলেন। এছাড়াও পঞ্চায়েতি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত মানুষের জন্য ছুটে গিয়েছিলাম বেলঘড়িয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে। আমরা গিয়ে দেখি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তিনি আজ পঞ্চায়েত অফিসে আসেননি। প্রধানের অনুপস্থিতি জিজ্ঞাসা করতেই পঞ্চায়েত কর্মীরা জানালেন চিকিৎসার জন্য তিনি রানাঘাট গেছেন। পঞ্চায়েতের তরফ থেকেই পঞ্চায়েতের এক সদস্য জানান নিলনগর গ্রামের একটি ক্যালভাট করা হয়েছে। এখানেই প্রশ্ন একটি ক্যালভার্ট থেকেই যদি গ্রাম উন্নয়ন হয় তবে কি সরকারি প্রকল্পের প্রয়োজন নেই? এখন দেখা সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত এবং সরকারি একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের থেকে বঞ্চিত এই মানুষগুলো কবে উন্নয়নের আলোতে আসবে! আগামী দিন কি পঞ্চায়েত পরিষেবা মিলবে এই গ্রামের বঞ্চিত দরিদ্র বাসিন্দাদের? সেই প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে। আগামী দিনের পঞ্চায়েতের তরফ থেকে কতটা নজর দেওয়া হয় এই গ্রামের দিকে?