নিউজ ডেস্ক : মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর ক্রমাগত আক্রমণ এর মাঝেই এবার আক্রমণের শিকার উত্তরপ্রদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়। উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরে এক খ্রিস্টান প্রার্থনা সভায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা সশস্ত্র হামলা চালায় কয়েক দিন আগে। উপস্থিত খ্রিস্টানদের মারধর ছাড়াও চুরি করে নেওয়া হয় তাদের মূল্যবান গহনা সহ অনেক কিছু। তাদের অভিযোগ উত্তরপ্রদেশের খ্রিস্টান গির্জা গুলি নিম্নবর্ণের হিন্দুদের অসৎ পন্থা অবলম্বন করে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করছে। সেই অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ পুলিশকে রাজ্যের প্রত্যেকটি চার্চের উপর কড়া নজরদারি রাখতে নির্দেশ দিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রতিক সময়ে পাস হওয়া ধর্মান্তরণ বিরোধী আইনের ফলে যে কোন ব্যক্তি অসৎ পন্থা অবলম্বন করে কোন হিন্দুকে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত করলে তার ৫ বছরের জেল এবং ১৫০০০ টাকা জরিমানা হবে। কিন্তু কোন অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বা নিম্নবর্ণের কোন হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করলে হতে পারে ১০ বছরের জেল এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানা। তবে এমন আইন শুধু উত্তর প্রদেশ নয় আছে হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ সহ বহু রাজ্যে। ১৯৬৭ সাল থেকে এমন আইন লিপিবদ্ধ থাকলেও এখনও পর্যন্ত ধর্মান্তরের অভিযোগে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারেনি ভারতের কোন আদালত।
উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের পুলিশ সুপারেনটেনডেন্ট এস আনন্দ জানিয়েছেন, শাজাহানপুরে সাম্প্রতিক সময়ে তিন নিম্ন বর্ণের হিন্দুকে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ জমা পড়েছে পুলিশের কাছে। ঘটনায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ জন খ্রিস্টানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ইউক্যান (UCAN) নামক খ্রিস্টান ধর্মীয় সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে। তবে উত্তরপ্রদেশের বেরেলীর খ্রিস্টান পাদ্রী হ্যারোল্ড ডিকুনহা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, “এমন অভিযোগ সমাজ বিরোধী সংগঠন থেকে করা হয়। যদি তারা এতোটাই নিশ্চিত হয়ে থাকে তাহলে তারা প্রমাণ করুক। তারা মাঝে মাঝে এমন অভিযোগ করে থাকে। এখনো পর্যন্ত কোনো অবৈধ ধর্মান্তরনের ঘটনায় ভারতের কোন চার্চ জড়িত পাওয়া যায়নি।” এ ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার সঞ্চার হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতির ব্যাপারে শাজাহানপুরের পুলিশ সুপারেনটেনডেন্ট সঙ্গে দেখা করবে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ।