১২ লাখ OBC সার্টিফিকেট বাতিলের মুখে: সুপ্রিম কোর্টে OBC শংসাপত্র বাতিল সংক্রান্ত মামলায় ফের একবার ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার।
সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যে সরকারের তরফে দায়ের করা OBC সংক্রান্ত একটি নতুন মামলা খারিজ করে দিয়েছে। ফলে রাজ্যের ১২ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া রায়ই বহাল থাকল। সুপ্রিমকোর্টে অনুপস্থিত রাজ্য সরকার।
তবে কী OBC সার্টিফিকেট বাতিল হোক চাইছে রাজ্য সরকার?
২০২৪ সালের ২২ মে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, ২০১০ সালের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে ওবিসি শংসাপত্র প্রদান সঠিক প্রক্রিয়ায় হয়নি। সেই কারণেই হাইকোর্ট প্রায় ১২ লক্ষ শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দেয়। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন ও নিজস্ব উদ্যোগে কিছু পড়ুয়ারা।
এরই মধ্যে ২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে একটি নতুন মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলাটি করেছিলেন অবনীকুমার বিশ্বাস। তবে, ৩১ জানুয়ারি বিচারপতি বি.আর গভৈ এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মসিহের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয় যে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করবে না। এরপরই অবনীকুমার বিশ্বাসের করা মামলাটি খারিজ করে দেয় দেশের শীর্ষ আদালত।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের ফলে ওবিসি শংসাপত্র বাতিল সংক্রান্ত মূল মামলার ভবিষ্যৎ নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বিচারপতি বিআর গভৈ-এর ডিভিশন বেঞ্চে। আইনজীবী মহলে এ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে।
একাংশের মতে, যেহেতু নতুন মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে, তাই মূল মামলাটিও খারিজ হতে পারে। অন্যদিকে, আরেক পক্ষের দাবি, মূল মামলার শুনানি এখনও চলছে এবং রাজ্যের আইনজীবীরা নিজেদের সওয়াল করছেন। ফলে, এই মুহূর্তে নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না যে, সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়ে পুরোপুরি সিলমোহর দিয়ে দিয়েছে।
আইনজীবী সামিম আহমেদ মনে করছেন, নতুন মামলাটি খারিজ হওয়ায় মূল মামলার উপর তার প্রভাব পড়তে পারে। তাঁর মতে, রাজ্যের অনুপস্থিতি এই মামলাকে অন্যপক্ষের কাছে সুবিধাজনক করে তুলেছে। এতবড় একটি মামলায় রাজ্যের তরফের আইনজীবী উপস্থিত না থাকাটা কোনওভাবেই কাম্য নয়।
এই পরিস্থিতিতে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির শুনানির দিকে নজর থাকবে সকলের। এই মামলার রায়ের ওপর নির্ভর করছে লক্ষাধিক ওবিসি শংসাপত্রধারীর ভবিষ্যৎ। সংখ্যালঘু বহু মানুষের আগামী জীবন চরম সঙ্কটের মুখে।