করোনা আবহে দর্শকশূন্য গ্যালারিতে খেলা হলেও ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের অন্তর্ভুক্তি আইএসএলে যে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে সন্দেহ নেই। সবমিলিয়ে বাড়ি বসেই আইএসএলে মজে দেশের তামাম ফুটবল অনুরাগীরা। আর এই ফুটবলযজ্ঞে সামিল হতে গিয়ে, পোডকাস্টে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণের মাঝে অনুরাগীরা ভুলতে বসেছেন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর অবস্থা।
ইস্টবেঙ্গল নতুন যোগদান করায় চলতি মরশুম শেষে বিষয়টি হয়তো উপলব্ধি করবে শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাস্তব চিত্র এটাই যে প্রতিবারই জাঁকজমক এবং চাকচিক্যে পূর্ণ টুর্নামেন্টের শেষে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর ভাঁড়ারে তো কিছু ঢোকেই না, উলটে লোকসান হয় কোটি-কোটি টাকা। পরিমাণটা ২৫ কোটির মত। চলতি বছর কোভিড আবহে দর্শকশূন্য খেলা হওয়ায় টিকিট বিক্রি নেই, নেই স্পনসরের জোগান। স্বাভাবিকভাবে চলতি মরশুমের শেষে অবস্থাটা আরও করুণ হতে চলেছে।
সবকিছু আঁচ করে এফএসডিএল (আইএসএল আয়োজক) চেয়ারপার্সন নীতা আম্বানির কাছে খোলা চিঠি লিখলেন বেঙ্গালুরু এফসি কর্ণধার পার্থ জিন্দাল। প্রত্যেক বছর ২৫ কোটি লোকসানের হাত থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী, পরামর্শ চেয়ে নীতা আম্বানির দ্বারস্থ হলেন সুনীলদের দলের কর্ণধার। যা আইপিএলের ভরা মরশুমে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।
চলতি বছর লোকসানের পরিমাণটা আরও বাড়তে পারে। এমতাবস্থায় ক্লাব চালানো দিনকে দিন দুঃসহ হয়ে উঠছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্য। মিসেস আম্বানিকে লেখা ভারতীয় শিল্পপতির চিঠিতে এমনই উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে। পার্থ জিন্দাল লিখেছেন, ‘টিকিটের থেকে কোনও রেভিনিউ চলতি বছর নেই। স্পনসরশিপ হারাতে হয়েছে। এর উপর বায়ো-বাবলের কারণে অতিরিক্ত খরচের বোঝা চেপেছে। ফল নাটকীয়ভাবে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি।’
দেশ-বিদেশের অন্যান্য লিগগুলো কঠিন সময়ে টেলিভিশন সম্প্রচার স্বত্ত্ব প্রদান করে ব্রডকাস্টিং চ্যানেলগুলোর থেকে অর্থ আদায় করে নিচ্ছে। যাতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা লোপ পাচ্ছে। এক্ষেত্রে আইএসএল সম্প্রচারকারী চ্যানেল স্টার স্পোর্টস নিজেই লিগের কো-ওনার। পাশাপাশি রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন লিগে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে ইয়ুথ ডেভলপমেন্টের জন্য ২ কোটি টাকার যে সাবসিডি দেওয়ার ঘোষণা করেছিল তাও সাসপেনশনের আওতায়। এমতাবস্থায় আইএসএলের আর্থিক পরিকাঠামো দিন দিন ভঙ্গুর হচ্ছে। খোলা চিঠিতে এমন ভাষাতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেএসডব্লু সিমেন্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর।