করোনায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে বাড়াবেন? জানুন

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20200622-WA0003

এনবিটিভি ডেস্ক: কোভিড-১৯ বা নোবেল করোনা ভাইরাস এখন বিশ্বব্যাপি উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার নাম। আর এর তীব্রতা ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে দেশ থেকে দেশান্তরে। ইতিমধ্যে থমকে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি।জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা । ভারতের প্রেক্ষাপটে ও সংকট ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করছে। কিন্তু নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে দীর্ঘ দিন লকডাউনের কারণে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতিতে।

এদিকে করোনার এখনো কোন প্রকারের প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় হার্ড ইম্যুনিটি তথা রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধির উপরে জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে করোনায় আক্রান্ত বা মৃত্যুর ঝুঁকি কমবে। তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় নিচের দেওয়া খাদ্য তালিকা মেনে চললে শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

খাদ্যভ্যাস: সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খান। ফলের রসের পরিবর্তে গোটা ফল চিবিয়ে খেলে ভালো। এতে পুষ্টি সাথে ফাইবারও পাওয়া যাবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি(জল) পান করুন, ৮ থেকে ১০ গ্লাস। ফাস্টফুড, তেল-চর্বি ও মসলা জাতীয় খাবার যতটুকু সম্ভব পরিহার করুন।

ভিটামিন ও মিনারেল: রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন ও মিনারেল ।

ভিটামিন সি: প্রাকৃতিক উৎস হচ্ছে টক জাতীয় ফল, যেমন- লেবু, কমলা, মাল্টা, আমড়া, জাম্বুরা ইত্যাদি। এ ছাড়াও বাজারে ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায়, যা ফ্লু উপসর্গে আপনি দিনে ১-২ বার চুষে খেতে পারেন। তবে প্রাকৃতিক উৎস থেকে পাওয়া ভিটামিন সি-এর কার্যকারিতা বেশি।

ভিটামিন ডি: এর প্রাকৃতিক উৎস হচ্ছে সূর্যরশ্মি। যা সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শরীরের কিছু অংশ উন্মুক্ত করে (যেমন মুখমণ্ডল, হাত বা ঘাড় ইত্যাদি) আপনি কাজে লাগাতে পারেন। এ ছাড়াও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ডিমের কুসুম, মাছের তেল, ওমেগা, গরুর কলিজা, চিজ এগুলো খেতে পারেন।

জিংক: ফ্লু বা সর্দি-কাশি উপসর্গে জিংকের বেশ উপকারিতা রয়েছে। জিংক-সমৃদ্ধ খাবারগুলো হচ্ছে আদা, রসুন, ডাল, বিন্স, বাদাম, সামুদ্রিক মাছ ইদ্যাদি। বাজারে লজেন্স আকারে জিংক সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন ২-৩ ঘণ্টা পর পর।

৩. মধু: মধুতে এমন কিছু জীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান রয়েছে, যেমন হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, নাইট্রিক অক্সাইড)। তাই ফ্লু উপসর্গে মধু বেশ উপকারী। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে সাবধানে খেতে হবে।

৪. প্রোবায়োটিকস: যেমন দই, চিজ ইত্যাদি খাবারে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৫. মানসিক চাপমুক্ত থাকুন: অতিরিক্ত মানসিক চাপে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে ফেলে। তাই মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। টিভি, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে খবরগুলো আপনাকে মানসিক চাপে ফেলছে, সেগুলো থেকে দূরে থাকুন। পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে ভালো সময় কাটান, গান শুনুন, বই পড়ুন, মুভি দেখুন বা নতুন কিছু শিখতে মনোনিবেশ করুন। মেডিটেশন একটি খুব ভালো উপায় মনকে শান্ত রাখার।

৬. শরীরচর্চা: শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শরীরচর্চা অপরিহার্য। বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন আমরা সবাই ঘরে অবস্থান করছি। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট এবং বাচ্চাদের অন্তর ১ ঘণ্টা শরীরচর্চা করা উচিত। ঘরে থেকে আপনি যা করতে পারেন হাঁটাহাটি, সাইক্লিং, ইয়োগা, ওয়েট শিফ্টিং, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা, এমনকি নফল নামাজ পরাও আপনার শরীর চর্চার উপায় হতে পারে।

৭. ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা: বিশেষ করে ধূমপান, সরাসরি আপনার শ্বাসতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যেহেতু করোনা ভাইরাস শ্বাসতন্ত্রের রোগ, এতে সংক্রমের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই ধূমপান বাদ দিন ও জবংঢ়রৎধঃড়ৎু ঊীবৎপরংব করুন।

৮. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা: শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অটুট রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার বিকল্প নেই। খাবার পরিমিত খান ও শরীরিকভাবে সচল থাকুন।

৯. ঘুম: অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা করে ঘুমনোর চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খুবই জরুরি।

১০. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: আমরা যদি করোনা ভাইরাস রোগের সংক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচাতে চাই নিজের ও আশপাশের পরিবেশের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। নির্দিষ্ট সময় পর পর হাত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্যবহার্য জিনিপত্র জীবাণুনাশক পদার্থ দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। দরজার হাতল, সুইচ, লিফ্টের বাটন জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার রাখুন ও মাস্ক ব্যবহার করুন।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর