মূর্খতাই মূল হাতিয়ার,কেরালায় ৯০% স্বাক্ষরতা বিজেপির প্রধান বাধা, স্বীকার একমাত্র বিজেপি MLA এর

নিউজ ডেস্ক : ভারতবর্ষের সমস্ত রাজ্যের বিজেপির প্রভাব মাত্রাতিরিক্ত বেশি সেই সমস্ত জায়গাতেই অশিক্ষা দারিদ্র্য এবং অজ্ঞতার প্রভাব বেশি। অর্থাৎ কট্টর সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল বিজেপির জনপ্রিয়তার মূল হাতিয়ার হলো অশিক্ষা এবং অজ্ঞতা। আর সেই কারণেই কেরালার মত ৯০% সাক্ষরতা বিশিষ্ট রাজ্য বিজেপির জনপ্রিয়তা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। অকপটে স্বীকার করলেন কেরালায় বিজেপির একমাত্র এমএলএ।

একথা বলেছেন সে রাজ‍্যে বিজেপির একমাত্র বিধায়ক ও রাজাগোপাল। ২০১৬ সালের নির্বাচনে নেমম কেন্দ্র থেকে এই রাজাগোপালের হাত ধরেই কেরলে খাতা খুলেছিল বিজেপি।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে একটি সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বিজেপি বিধায়ককে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেরালায় এখনও কেন রাজনৈতিক প্রভাব তৈরি করতে পারছে না বিজেপি, যেখানে পশ্চিমবঙ্গে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই তারা নিজেদের মাটি যথেষ্ট শক্ত করেছে। এর উত্তরে রাজাগোপাল বলেন, “কেরালা সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের একটা রাজ‍্য। এখানে বিজেপির জায়গা তৈরি করতে না পারার পিছনে দু-তিনটি কারণ রয়েছে। কেরলে সাক্ষরতার হার ৯০ শতাংশ। এরা নিজেদের যুক্তিবাগীশ ভাবেন। এটা শিক্ষিত মানুষদের অভ‍্যাস। এটা একটা বিষয়। দ্বিতীয় কারণটি হল এখানে ৫৫ শতাংশ হিন্দু এবং ৪৫ শতাংশ সংখ্যালঘু রয়েছে। যে কারণে কেরালাকে অন্য কোনও রাজ্যের সাথে তুলনা করা যায় না। এখানকার পরিস্থিতি আলাদা।”

এর আগে একাধিকবার বাম শাসিত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের প্রশংসা করেছেন ও রাজাগোপাল। সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এখানে কোনো রাজনৈতিক কারণ নেই। কোনো ভালো কাজ হলে তার প্রশংসা করা উচিত। প্রতিটি মানুষের কিছু না কিছু গুণ থাকে। যে কোনো জিনিস পরিচালনা করার অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে বিজয়নের। তিনি দক্ষ, বুদ্ধিমান, কম কথা বলেন কিন্তু নিজের লক্ষ্য পূরণ করেন। উনি খুব গরীব পরিবারের ছেলে, যেখান থেকে আজ উনি এই জায়গায় এসেছেন। ওনার নিশ্চিত কোনো গুণ রয়েছেন, যার জন্য আজ উনি এখানে পৌঁছেছেন, এই সত‍্যকে আমাদের গ্রহণ করা উচিত।”

কেরালায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে আবার বাম দলগুলো দীর্ঘদিনের পরম্পরা ভেঙে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। রাজ্যটিতে বহুদিন শাসনভার ধরে রাখা কংগ্রেস শিবিরের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন তারা এখন ডুবন্ত তরী তাদেরকে কেউ উদ্ধার করতে পারবে না।

বয়সজনিত কারণে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না রাজাগোপাল। তাঁর পরিবর্তে নেমম থেকে এবার প্রার্থী হচ্ছেন কুম্মানন। কেরলে বিজেপির প্রার্থী বাছাই নিয়ে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গিয়েছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক। এমনকি কেরালার ১৪০ টি বিধানসভা আসনের প্রত্যেকটিতে উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে পায়নি গেরুয়া শিবির। তার ওপরে বেশকিছু বিজেপি এবং বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়ন বিভিন্ন অভিযোগে বাতিল করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।  আর এখন দক্ষিণে সব থেকে উন্নত রাজ্য কেরালার বিধানসভায় বিজেপির একমাত্র প্রতিনিধি এমন মন্তব্য করায় রাজ্যটিতে বিজেপির ফলাফল কেমন হতে পারে তা খুবই স্পষ্ট বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Latest articles

Related articles