এনবিটিভি ডেস্কঃ এবার বাংলার শ্রমিকরা হেনস্থার শিকার গুজরাটে। পুলিশের প্রশ্ন বাড়ি কোথায়? উত্তর আসে পশ্চিমবঙ্গে, শুনেই পুলিশের লাঠি পিঠে। তারপর প্রশ্ন, কী নাম? কেউ বলেন, ‘বাবর আলি’। কেউ বলেন, ‘মানোয়ার শেখ’। মুসলিম শুনেই আবার মার। লকডাউনে বিজেপি–শাসিত গুজরাটের সুরাটে এমনই অত্যাচারের শিকার বাংলার শ্রমিকরা। হাতে একটা টাকাও নেই। খাবার নেই। ৫ জনের থাকার ঘরে কষ্ট করে মাথা গুঁজে থাকছেন ১০–১২ জন করে। ফেরার তো কোনও ব্যবস্থা গুজরাট সরকার করছেই না, উল্টে নিজেরা খোঁজ নিতে গেলে কপালে জুটছে পুলিশের মার।
এই মুহূর্তে সুরাটের অম্বর কলোনিতে আছেন মুর্শিদাবাদের ২৫০ জন। এছাড়া বীরভূমের ১০০ জন, বর্ধমানের ৪০০ জনের মতো শ্রমিক রয়েছেন।
মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমার বড়োঞা থানার কুলি, শিমুলিয়া, রামরামপুর, হরিমাটি প্রভৃতি ১০–১২টি গ্রামের ২৫০ জন শ্রমিক সুরাটের অম্বর কলোনির এক বস্ত্র কারখানায় কাজ করেন। শাড়িতে লেস বসানো হল তঁাদের কাজ। ২০০৮ সাল থেকে মানোয়ার, বাবররা সুরাটে আছেন। কারখানার ছোট্ট ঘরে থাকা, রান্না করে খাওয়া। মাসে ১২–১৫ হাজার টাকা মতো আয় হয়। কিন্তু করোনা সব গন্ডগোল করে দিয়েছে।
লকডাউন শুরু হওয়ার ক’দিন পরেই মালিক মানোয়ারদের জানিয়ে দেন, ঘরে আছ, থাকো। কিন্তু আর কোনও সাহায্য করতে পারব না। তারপর? বৃহস্পতিবার সুরাট থেকে মানোয়ার, বাবররা বলেন, ‘এ এক দুর্বিষহ যন্ত্রণা। বলে বোঝাতে পারব না। এখানকার সরকার একদিনও খাবার দেয়নি। কেঁদে–কেটে মালিককে ফোন করলে একবার–দু’বার দিয়েছে। বাড়ি ফেরার জন্য ওদের দেওয়া হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে কেউ ফোন ধরেনি। জানেন, নিজেরা স্টেশনে ট্রেনের খোঁজ করতে গেলে পুলিশ রাস্তায় ধরে নানা প্রশ্ন করছে, তারপরই মার। মুসলিম শুনলে বেশি মারছে।’ রোজার সময় কী করে ইফতার হচ্ছে? শুনেই মানোয়ার বলেন, ‘কী বলব, জল–বিস্কুট খেয়ে রোজা ভাঙছি। আর আমরা পারছি না, মমতাদিকে বলে আমাদের ফেরার ব্যবস্থা করে দিন। আর কোনওদিনই গুজরাটে আসব না। বাড়িতে আলুসেদ্ধ–ভাত খেয়ে থাকব সে–ও ভাল। মমতাদি আমাদের নিয়ে যান!’
সুত্রঃ আজকাল