শোভনের গ্রেফতারের খবর শুনে ছুটলেন রত্না, দেখা নেই বান্ধবী বৈশাখীর

বিবাহবিচ্ছেদের মামলা এখনও চলছে, তবে দুর্দিনে স্বামী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পাশে রত্না চট্টোপাধ্যায়। যিনি কিনা বর্তমানে বেহালা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। সোমবার সকালে নারদ কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআইয়ের তরফে কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় নিজাম প্যালেসে। তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। খবর কানে পৌঁছনো মাত্রই তড়িঘড়ি নিজাম প্যালেসে পৌঁছন রত্না। গাড়ি থেকে নেমেই হন্তদন্ত হয়ে ছুটতে দেখা যায় তাঁকে। সাম্প্রতিক অতীতে শোভন-রত্নাকে একে অপরের বিরুদ্ধে একাধিকবার আক্রমণ শানাতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু দুর্দিনে স্বামীর পাশে দাঁড়াতে ভরসার হাত বাড়িয়ে দিলেন সেই রত্নাই। দেখা নেই বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের!

বেহালা (Behala) পূর্বের বিধায়ক বলেন, “শোভনের জন্যই সিবিআই দপ্তরে ছুটে এসেছি। অন্য কোনও কারণ নেই। আইজীবী নিয়োগ করেছি, দেখা যাক কী হয়!” আজও সেই একইরকমভাবে স্বামীর পাশে তিনি, এই ভাবে তিনি বুঝিয়ে দিলেন।

পাশাপাশি নারদ-মামলায় রাজ্যের আরও দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee) এবং বিধায়ক মদন মিত্রও (Madan Mitra) গ্রেপ্তার হয়েছেন আজ। এপ্রসঙ্গে রত্নার মত, “এটা বিজেপির প্রতিহিংসা-পরায়ণ আচরণ! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে ভোটে জিততে পারেনি। তাই এসব করছে।” নোটিশ ছাড়া কীভাবে কাউকে তুলে এনে গ্রেপ্তার করতে পারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা? পাশাপাশি সেই প্রশ্নও তুলেছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়।

কিছুদিন আগেই বিধানসভা ভোটে লজ্জাজনক হারের স্বাদ গ্রহণ করেছে বিজেপি। বিজেপির ইশারায় এবং তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণে কাজ করে সিবিআই। এই দাবি সব সময় করতে দেখা যায় বিরোধী দলগুলোকে। এবারেও তার ব্যতিক্রম নয়। হারের পর সরকার গঠনের ঠিক পরেই গ্রেফতার করা হলো শাসক দলের বাছা বাছা ৪ নেতাকে। বিস্ময়কর ভাবে ছাড় পেয়ে গেছে একই দুর্নীতি মামলায় জড়িত ২ প্রাক্তন তৃণমূল নেতা যারা বিজেপির আশ্রয়ে আছে বর্তমানে।

প্রসঙ্গত, বিবাহবিচ্ছেদ না হলেও দীর্ঘদিন ধরেই একসঙ্গে থাকেন না শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। দু’জনের সম্পর্কের টানাপোড়েনও একাধিকবার শিরোনামে এসেছে। নেপথ্যে উঁকি দিয়েছে একটাই নাম- বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী শোভন-বৈশাখী যখন গত লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তখন রত্নাও আরও বড় পরিসরে সক্রিয় রাজনীতিতে নামতে তৃণমূলের হাত ধরেছিলেন। এরপর একুশের বিধানসভা ভোটে টিকিট না পেয়ে বিজেপি-ত্যাগ করেন শোভন-বৈশাখী। সেই প্রেক্ষিতে তৃণমূলের হয়ে নির্বাচনী টিকিট পেয়ে বিপুল ভোটে বিজেপির তারকা প্রার্থীকে পায়েল সরকারকে হারিয়ে বিধায়ক হন রত্না চট্টোপাধ্যায়। শোভন-বৈশাখী তৃণমূলে (TMC) ফিরলেও তাঁর আপত্তি নেই বলেই জানিয়েছিলেন বিধায়ক রত্না। এবার স্বামীর বিপদের দিনে ভরসা জোগাতে নিজাম প্যালেসেও ছুটলেন তিনি।

উল্লেখ্য, বান্ধবী বৈশাখীর প্রতি ঝুঁকলেও রত্না যে আজও স্বামী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কথা উঠলে চোখের জল ফেলেন, বিধানসভা ভোটের আগে এক সাক্ষাৎকারেই তা দেখা গিয়েছিল। কিন্তু শোভনের এই দুর্দিনে আজ দেখা গেল না বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।

Latest articles

Related articles