দেশব্যাপী দৈনিক সংক্রমণ অনেকটাই কমেছে। ফলে করোনা সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউ এর মারণ প্রভাব একটু হলেও কমতে শুরু করেছে। গত ৪৮ দিনে দেশে দৈনিক সংক্রমণ সর্বনিম্ন ছিল শনিবার (১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৭৯০)। বঙ্গেও নিন্মমুখী আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই দৈনিক আক্রান্ত ২০ হাজারের ঘর থেকে নেমে এসেছে ১৫ হাজারের কোটায়। অধিকাংশ রাজ্যেই আক্রান্তের গ্রাফ নিম্নমুখী হওয়ায় ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল করার কথা ভাবছে প্রশাসন। তবে ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। যেমন, পুণেতে গত পাঁচ দিন একটানা দৈনিক আক্রান্ত ছিল ৩ হাজারের কম। পজ়িটিভিটির হার নেমে গিয়েছে ১০ শতাংশের নীচে। ফলে শহরটিতে সপ্তাহান্তে যে লকডাউন চলছিল তা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। তা ছাড়া, গোটা সপ্তাহজুড়ে সকাল ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খুলে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। জরুরি পণ্যের মধ্যে রাখা হয়েছে আনাজ, ফল, দুধ, মাংস, ডিম, বেকারি, মিষ্টি-সহ যে কোনও খাবারের দোকানকে।
সোমবার সকাল ৫টা থেকে ধীরে ধীরে শহরের লক ডাউন শিথিল করার প্রক্রিয়া চালু হবে বলে জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। তিনি জানান, নির্মাণকাজ ও কারখানাগুলিকে সবার প্রথমে চালু করা হবে। এর পর প্রতি সপ্তাহে পরিস্থিতি বিচার করে ধাপে ধাপে লকডাউন তোলা হবে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯০০ জন। তামিলনাড়ুতে ৭ জুন পর্যন্ত লকডাউন বাড়লেও কিছু কিছু পরিষেবায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। লকডাউনের প্রথম ধাপে মুদির দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও সরকার জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের থেকে অনুমতি নিয়ে ওই দোকানগুলি ঠেলাগাড়ি বা ভ্যানে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জিনিস বিক্রি করতে পারবে।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা আজ জানিয়েছেন, লকডাউন না বাড়াতে চাইলে রাজ্যবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। আপাতত সেখানে ৭ জুন পর্যন্ত লকডাউন চলার কথা থাকলেও তা বাড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। উত্তরপ্রদেশেও আক্রান্তের হার কমছে বলে শনিবার জানিয়েছে প্রশাসন।
যদিও কিছু কিছু রাজ্যে এখনও ঝুঁকি না নিয়ে লক ডাউন বৃদ্ধি করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ১৫ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে লক ডাউনের মেয়াদ। কেরলে ৯ জুন এবং গোয়ায় ৭ জুন পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। এ জন্য তৈরি থাকার জন্য কেন্দ্র সরকার এবং সব রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে। সে কথা মাথায় রেখে সরকারকে সহায়তার জন্য শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করছে অন্ধ্রপ্রদেশ।