অসম পুলিশের বর্বরতার ছবি, অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

নিউজ ডেস্ক : মৃতদেহের ওপর হামলা চালান ওই ব্যক্তি কে? সেই বিষয়ে সরকারিভাবে এখনও কিছু জানান হয়নি। তবে শোনা যাচ্ছে ওই ব্যক্তির নাম বিজয় শঙ্কর বানিয়া। সে দারং-এর জেলা কমিশনারের দফতের কাজ করে। স্থানীয়রা আরও জানাচ্ছেন, ওই ব্যক্তি একজন ফট্রোগ্রাফর। গত বিধানসভা ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সে জেলায় কাজও করেছিল।

অসমের দারং জেলায় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে এক ব্যক্তিকে মৃতদেহের ওপরে বর্বর আচরণ করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি লাঠি নিয়ে পুলিশে দিকে দৌড়ে যাচ্ছে। এরপর ওই ব্যক্তির বুকে গুলি করে পুলিশ। তাতে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। তারপরেই মৃত ওই ব্যক্তির দেহের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে লাথি ঘুসি মারতে দেখা গেল অপর এক ব্যক্তিকে।

পুলিশের দাবি, ওই এলাকাতে বসবাস করছে অনুপ্রেবেশকারীরা। তাদের সেখানে থেকে উচ্ছেদ করার কাজ শুরু হলে বাধা দেয় ওই বেআইনি দখলদাররা। উচ্ছেদকার্যে বাধা দিতে অতর্কিতে পুলিশের উপরে শুরু হয় পাথর বৃষ্টি। এদিকে গোটা ঘটনা নিয়েই ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক দোষারোপের পালা শুরু হয়েছে। অসমের কংগ্রেস সভাপতি ভূপেন বরা গোটা বিষয়টির জন্য শাসকদলকে নিশানা করেছেন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তিনি। এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত করার পাশাপাশি ওই এলাকার পুলিশ সুপার এবং ডেপুটি কমিশনারকে অবিলম্বে সাসপেন্ড করার দাবি করেন তিনি। অসমের কংগ্রেস সভাপতি শুক্রবার দরং এলাকায় যাবেন বলেও জানিয়েছেন। এই সঙ্গেই তাঁর দাবি, সেখানে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা গণতন্ত্রের পক্ষে ভয়ঙ্কর। অসমে BJP সরকার বুলেটের সাহায্যে শাসন করতে চাইছে। ভূপেন বরা দাবি করেন, করোনার সময়ে কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না বলে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, অসমের মুখ্যমন্ত্রীর হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার সেই নির্দেশ মানছে না। তিনি বলেন, ‘ঢোলপুর এলাকা থেকে যাদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করা সেখানে তারা ১৯৭০ সাল থেকেই বাস করছেন। এখন গায়ের জোরে তাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আমাদের দাবি, তাদের জোর করে উচ্ছেদ করার আগে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর উচিত তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।’

গত সোমবার এই কর্মসূচি চালানো হয়েছিল ঢোলপুর বাজার এলাকা, পশ্চিম চুবা এলাকা, শিপাঝাড়ের অন্তর্গত ঢোলপুর ১ এবং ঢোলপুর ৩ এলাকায়। পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের গোলমাল হয় ঢোলপুর ১ এবং ৩ অঞ্চলে। দুপুর ১২টা নাগাদ হাজারেরও বেশি জনতা কর্মসূচির প্রতিবাদ শুরু করেন। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যেতে থাকে। এরপর পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে পাথর ছোড়া শুরু হয়। ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করা হয় বলেও খবর। এরপরেই পুলিশের তরফে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। শূন্যে গুলিও চালানো হয়।

দু’জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর খবর এখনও স্বীকার করেননি দারাং জেলার সুপারিন্টেন্ডেন্ট অফ পুলিশ সুশান্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলছেন, দু’জন আহত হয়ে হাসপাতালে। এদিকে এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাহুল গান্ধী। তিনি টুইট করে লেখেন, ‘অসমের সরকারই গুলি চালাচ্ছে। আমি রাজ্যের ভাই বোনেদের পাশে আছি। এমনটা কারও সঙ্গেই ঘটা উচিত নয়।

Latest articles

Related articles