কেউ কিডনি বিক্রি করেছেন সংসার চালাতে, কেউ বা চিকিত্সার প্রয়োজনে। কিন্তু অভাব এতটাই প্রকট যে এছাড়া উপায় ছিল না। ঘর ফুটো হয়ে জল পড়ছিল। চিকিত্সার অভাবে ধুঁকছিলেন স্বামী। খবর মিলেছে, এসব সামাল দিতেই গত তিন বছরে কিডনি বিক্রি করেছেন তাহেরপুরের একই এলাকার ৬ জন!
তার মধ্যে রয়েছেন একই পরিবারের চারজনও। অথচ পঞ্চায়েতের কাছে নাকি খবরই যায়নি। সাহায্যের জন্য কেউ সেই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াননি। জানা গিয়েছে, গত তিন বছর ধরে এমনটা হচ্ছে নদিয়ার তাহেরপুর থানার শর্মা পাড়া এলাকায়। যদিও পঞ্চায়েত প্রধানের সাফ কথা, তাঁরা কিছুই জানতেন না। এখন শুনছেন।
এক কিডনি দাতা জানালেন, বাড়িঘর মেরামতিতে টাকার দরকার ছিল তাই কিডনি বেচেছেন। এলাকারই একজনের মারফত তিনি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কিডনি দিয়েছেন। সেখানে সাড়ে চার লক্ষ টাকার রফা হয়েছিল, কিন্তু এখনও অবধি পেয়েছেন চার লক্ষ টাকা। বাকি ৫০ হাজার টাকা তাঁকে দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে স্বামীর চিকিত্সার জন্য অর্থের অভাব ছিল, তাই বাধ্য হয়ে কিডনি দিয়েছেন স্ত্রী। আরেকজন পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, তিনিও দিয়েছেন কিডনি। তবে তিনি অবশ্য বিনামূল্যেই দান করেছেন বলে জানান। সংসারে অভাব রয়েছে, তা সত্ত্বেও কী ভাবে তিনি কিডনি দান করলেন স্বেচ্ছায়? সে প্রশ্ন করতে তিনি জানান বিষয়টা স্পর্শকাতর। নদিয়ার তাহেরপুর থানার কালীনারায়ণপুর পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মন্ডলপাড়া এলাকার ছবিটা এমনই। অধিকাংশ বাসিন্দারাই দারিদ্র্যসীমার নীচে। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় তাঁদের। যদিও পঞ্চায়েতের কাছে বিষয়টা স্পষ্ট নয়। এতকিছু নাকি জানতেনই না প্রধান। যদিও কারা কারা কিডনি বেচে সংসার চালাচ্ছেন এলাকার সকলেই জানেন তাঁদের নাম। কিন্তু তাঁদের জীবন কী এভাবেই চলবে? এই টাকা ফুরোলে, তারপর? উত্তর মেলে না।
সূত্র : THE WALL