মহঃ আসিফ আহমেদ, এনবিটিভি, কলকাতা: বিশ্বজুড়ে সংঘটিত বর্ণ ও জাতি বিদ্বেষ এবং নিরীহ মানুষদের হত্যার বিরুদ্ধে দলিত মুসলিম ও আদিবাসী নেতৃত্ব একযোগে নিন্দা জানালো। সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের উদ্যোগে “বর্ণ ও জাতিবিদ্বেষ মানবতার অপমান” শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এই অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সে দলিত নেতা সুকৃতিরঞ্জন বিশ্বাস বলেন বহুকাল ধরে এদেশে দলিতরা অত্যাচারিত হচ্ছে। তিনি বলেন দলিতরা অত্যাচারিত হলে উচ্চবর্ণের হিন্দুরা কোন প্রতিবাদ করেন না। সুকৃতি বাবু আক্ষেপ করে বলেন উচ্চবর্ণের হিন্দুপাড়ায় সংবিধানপ্রণেতা বাবাসাহেব আম্বেদকর জয়ন্তী পর্যন্ত পালিত হয় না।
সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বলেন, আমেরিকায় জর্জ ফ্রয়েডের নির্মম হত্যা বিশ্ববিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন পরাজিত ও পরাভূত মানুষদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাম্য ও সমতার অধিকারের জন্য সোচ্চার হতে হবে। যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক মাওলানা কামরুজ্জামান বলেন, উচ্চবর্ণের একটি মেয়েকে বিবাহ করার দায়ে মহারাষ্ট্রে একটি দলিল যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হল। এটা একবিংশ শতাব্দীর চূড়ান্ত লজ্জা। তিনি বলেন আমেরিকায় ১৮৮০ সাল থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত এই ৮০ বছরে চার হাজার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। একইভাবে আমাদের স্বাধীন ভারতে জাতিদাঙ্গায় নিরীহ লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এটা আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে এক লজ্জাজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে।
মুসলিম থিংক ট্যাঙ্কের রাজ্য সভাপতি শাহ আলম বলেন, বর্ণবাদীরা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জাতি ও বর্ণ বিদ্বেষের পরিবেশ গড়ে তুলেছে।
আদিবাসী মুক্তি মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক বীরেন্দ্রনাথ মাহাতো, বর্তমান সময়ের নিরীহ মানুষের উপরে জুলুম বন্ধ করতে দলিত মুসলিম আদিবাসী যৌথ আন্দোলন করা দরকার বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। অধ্যাপক মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন জাতীয় বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। হাফেজ নাজমুল আরেফিন দিল্লিতে এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী সফুরা যার এর মুক্তির দাবি জানান। এদিন আলোচনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাবর হোসেন, মাওলানা এলাহী বক্স, শহিদুল ইসলাম, তৈবুর রহমান, মুক্তার মোল্লা, মাহবুবার রহমান, মোহাম্মদ আলী প্রমূখ।