হাওড়ার বাউরিয়া জুট মিলে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। সহকর্মীদের কুরুচিকর মজার বলি হলেন ৫৩ বছর বয়সি শ্রমিক সাবের মল্লিক। অভিযোগ, সহকর্মীদের মধ্যে মজা করতে গিয়েই এক শ্রমিক ব্লোয়ার যন্ত্রের মাধ্যমে তার মলদ্বারে জোরপূর্বক উচ্চচাপের হাওয়া ঢুকিয়ে দেয়। এই নির্মম ঘটনার জেরে ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কি ঘটেছিল সেইদিন?
সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ টিফিন টাইমের পর সাবের মল্লিক কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। ঠিক তখনই সহকর্মীদের মজার ছলে এক শ্রমিক ব্লোয়ার যন্ত্র দিয়ে তার মলদ্বারে জোর করে হাওয়া ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এর ফলে তার পেট অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যায় এবং তিনি সঙ্গে সঙ্গেই অচেতন হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে মিল কর্তৃপক্ষ দ্রুত তাকে উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা জানান, পেটে প্রবেশ করা অত্যধিক হাওয়ার চাপে তার নাড়ি-ভুঁড়ি ফেটে গিয়েছে। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সন্ধ্যায় সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
মৃত সাবের মল্লিকের বাড়ি বাউড়িয়া থানার চকমধু গ্রামে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, স্বভাবগতভাবে নম্র হওয়ায় সহকর্মীরা তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই জুট মিলে কাজ করতেন। তার এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
মৃত সাবের মল্লিকের মেয়ে এই বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, বাবার মর্মান্তিক মৃতুর শোকের পরেও পরীক্ষায় বসতে সে পিছপা হয়নি। মূল উপার্জনকারীর অপ্রত্যাশিত মৃত্যুতে পরিবারটির অসহনীয় করুণ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে।
এই ঘটনায় মানিকতলা থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত বাউড়িয়া থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে মৃতের পরিবার।