
ওয়াকফ সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডে, ১০ মার্চ ২০২৫ সোমবার আয়োজিত হল প্রতিবাদী মঞ্চ। ধর্মতলায় আজ দুপুর ১২ টা থেকে শুরু হয়েছে এই ধর্না ও অবস্থান বিক্ষোভ, চলবে বিকেল ৪ টে পর্যন্ত। এই অবস্থান-বিক্ষোভ সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। মূলত ওয়াকফ সংশোধনী বিল পার্লামেন্টে পাশ করানোর যে পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে, তার বিরুদ্ধে এই আন্দোলন।
ভারতীয় সংবিধানে প্রথম ১৯৫৪ সালে ওয়াকফ আইন বলবৎ হয়। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে এই আইনের সংশোধনী বিল পাস হয়। বর্তমানে, অর্থাৎ ২০২৫ অর্থবর্ষে ভারতে মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১.২ লক্ষ্য কোটি টাকা। যার মধ্যে ৯.৪ লক্ষ একর জমি এবং ৮.৭ লক্ষ সম্পত্তি রয়েছে। সাধারণ মানুষের একাংশ সহ বিরোধী দলগুলি মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার এই সম্পত্তি কুক্ষিগত করার উদ্দেশ্যে, ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস করাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
ওয়াকফ বিল সংক্রান্ত বিজেপির শর্তসাপেক্ষ নিয়মাবলী:
1) আগে যেকোনো সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি বলে গণ্য করা যেত। এখন জেলার প্রশাসক বা ডেপুটি কমিশনারের হাতে দেওয়া হয়েছে।
2) ওয়াকফের অন্তর্ভুক্ত সমস্ত সম্পত্তি গুলিকে কেন্দ্রীয় পোর্টালে ডিজিটাল নথিভুক্তকরণ করতে হবে।
3) তিন সদস্যের ট্রাইবুনাল ২ সদস্যে সীমিত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়। ৯০ দিনের মধ্যে এপ্রিলকরা যাবে।
4) ওয়াকফ বোর্ড এবং সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
মুসলিম সংগঠন গুলি এবং বিরোধী দলগুলি এই আইনের বিরোধিতা করছে। তারা মনে করছে বিজেপি সম্পত্তির অধিকার মুসলিমদের থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে তাদের বলে দাবি করতে পারে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের প্রতিবাদী মঞ্চে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন যে, যেহেতু ওয়াকফ মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাই এই সংশোধনী বিল সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। তিনি আরও বলেন যে, ওয়াকফ সংশোধনী বিলের মাধ্যমে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার চাইছে মুসলিমদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানাতে ও নিজেদের ফ্যাসিবাদী স্বার্থ কায়েম করতে। সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোটাকে নষ্ট করে দেওয়াটাই তাদের মূল লক্ষ্য।