
নাসার ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামসের সম্প্রতি মহাকাশ মিশন শেষে পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিক্রিয়া আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মোদি তাকে “গুজরাতের কন্যা” অভিহিত করে সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসা জানালেও, এই ঘটনার পটভূমিতে জড়িয়ে আছে এক জটিল রাজনৈতিক ইতিহাস।
সুনীতার পরিবারের সদস্য হরেন পাণ্ড্য ২০০২-২০০৩ সালের গুজরাত দাঙ্গার সময় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। মোদির সাথে রাজনৈতিক মতবিরোধের জেরে তাকে একটি কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। ২০০৩ সালে একটি হামলায় তার মৃত্যু হয়। কেরল কংগ্রেসের বক্তব্য অনুযায়ী, দাঙ্গায় মোদির ভূমিকা নিয়ে গোপন তথ্য ফাঁস করায় পাণ্ড্যকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। যদিও এই অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়নি, পাণ্ড্য পরিবার আজও মোদির প্রতি ক্ষোভ পোষণ করেন।

প্রথম মহাকাশযাত্রার পর ২০০৭ সালে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে গুজরাত ভ্রমণে এলে মোদি সরকারের দেওয়া ভিভিআইপি সুবিধা প্রত্যাখ্যান করেন সুনীতা। তিনি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদির সাথে সাক্ষাৎ এড়িয়ে হরেন পাণ্ড্যার বিধবা স্ত্রী জাগৃতির সাথে সময় কাটান। এ সময় সরকারি গাড়ি ব্যবহার থেকেও বিরত থাকেন তিনি, যা রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের ইঙ্গিত দেয়।

উল্লেখ্য, সুনীতা উইলিয়ামস মার্কিন নাগরিক। তার পৈতৃক নিবাস গুজরাতের মেহসানায় থাকলেও, পরিবারের সাথে মোদি সরকারের সম্পর্কের অবনতি স্পষ্ট। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত ভ্রমণে এলে তা হবে তার শিকড়ের টানে, কোনো রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ নয়।
সুনিতাকে ভারতে আমন্ত্রিত করে আনার মোদির প্রচেষ্টা এবং তা নিয়ে বিরোধী দলের সমালোচনা রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। সুনীতা উইলিয়ামসের ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে, এই প্রেক্ষাপটে জনমনে মোদির ভাবমূর্তির কোনো পরিবর্তন হয় কি না।