১৯ টি মালদ্বীপের চেয়ে বড় তুষার পর্বত অগ্রসর হচ্ছে ব্রিটিশ ভূখণ্ডের দিকে, আশঙ্কা ভীষন বিপর্যয়ের

সাইফুল্লা লস্কর

বিশেষ প্রতিবেদন : আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান পত্রিকাগুলোর ভাষ্য অনুসারে, ১৯ টি মালদ্বীপের চেয়ে বড় একটি তুষার পর্বত আটলান্টিক মহাসাগরের ব্রিটিশ ওভারসিজ অঞ্চল দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপের অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে। এই আইসবার্গটি পৃথক হয়েছে অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ড থেকে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার রাজ্যের চেয়ে বড়, বর্তমান রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত জো বিডেন যে রাজ্যের বাসিন্দা।

A68 আইসবার্গটি আস্তে আস্তে দক্ষিণ জর্জিয়া অভিমুখে অগ্রসর হওয়ার ফলে ভবিষ্যতে এটি আঘাত হানলে এই ছোট দ্বীপের প্রভূত ক্ষতি হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন। আইসবার্গের আয়তন ৫৭০০ বর্গকিলোমিটারের বেশি। এটির বৃহত্তম অংশ ২৬০০ বর্গ কিলোমিটারের বেশি অঞ্চল নিয়ে গঠিত, যা দ্বীপেটির দিকে সোজা এগিয়ে চলেছে। আইসবার্গের চেয়ে দ্বীপটি আয়তনে অনেক ছোট । তুষার পর্বতটির এমন নামকরন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বরফ কেন্দ্র ইউএসএনআইসি করেছে কারণ এটি অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ডের চার (A, B, C এবং D) চতুর্ভুজ বিভাগের A থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সেই আইসবার্গ ২০১৭ সালে বিশ্বের বৃহত্তম আইসবার্গে পরিণত হয়েছিল।

দ্বীপটির ওপর হিমশৈলটির সম্ভাব্য প্রভাবসমূহ :

বিশাল আইসবার্গ কয়েক মিলিয়ন লিটার মিষ্টি জল ধারণ করে, একবার গলে গেলে দ্বীপটি সংলগ্ন জলভাগের প্রাণী এবং উদ্ভিত জগতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

যদি এটি দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপের সান্নিধ্যে আসে তবে সেই ছোট দ্বীপের ভৌগলিক গঠন পরিবর্তিত হয়ে যাবে। সী বেড ব্যাঘাত প্রাপ্ত হবে।

সম্পূর্ণ বাস্তুতন্ত্র প্রভাবিত হবে। অ্যান্টার্কটিকের ক্রিল পেঙ্গুইনদের এবং তিমিগুলোর অপরিহার্য খাদ্য। ক্রিলের সংখ্যা কমলে ফলস্বরূপ পেঙ্গুইন, সিল এবং তিমির স্থানীয় গোষ্ঠীগুলির ক্ষতি হবে।

অনেক বিজ্ঞানী ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন আইসবার্গ সেই দ্বীপে থামতে নাও পারে বরং এটি উত্তর দিকে এগিয়ে চলবে যা দ্বীপটির বাস্তুতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ হতে পারে।
বিজ্ঞানীদের মতামত অনুসারে একটি ইতিবাচক রূপান্তর ঘটতে পারে এক্ষেত্রে। যদি আইসবার্গটি উন্মুক্ত সমুদ্রের মধ্যে আটকে পড়ে তবে প্রচুর পরিমাণে সামুদ্রিক আবর্জনা বহন করা এই বরফের পর্বত্টি সমুদ্রের প্লাঙ্কটনগুলিকে উজ্জীবিত করতে পারে যা বায়ুমণ্ডল থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করতে পারে।

বিজ্ঞানীরা ধারাবাহিকভাবে সেই আইসবার্গের চলাফেরার গতি এবং পথ সন্ধান করছেন। তবে এটি ব্রিটিশদের অধীন থাকা ওই ভুখন্ডটির ঠিক কতটা ক্ষতি করবে সে প্রশ্নের উত্তর শুধু সময় দিতে পারবে।

Latest articles

Related articles