
রবিবার দুপুরে কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিজেপির এক সাংগঠনিক সভা থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে সিঁদুর নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছেন এবং এর মাধ্যমে দেশের কোটি কোটি নারীর আবেগকে আঘাত করেছেন। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঁদুরকে অসম্মান করেছেন। সেনার কৃতিত্ব নিয়েও তিনি রাজনৈতিক মন্তব্য করছেন যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
অমিত শাহ এদিন স্পষ্টভাবে জানান, “পাকিস্তান ঘাঁটি থেকে আসা সন্ত্রাসবাদীরা পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের ধর্ম যাচাই করে খুন করেছে। সেই ঘটনার বদলা নিতে আমাদের সেনা পাকিস্তানের সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। কয়েকশো জঙ্গিকে একঝটকায় শেষ করে দেওয়া হয়েছে। আপনি বলুন, এটা কি আমাদের কর্তব্য নয়?”
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এয়ার স্ট্রাইক করেছি, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছি, ১০০ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে পাকিস্তানের মাটিতে অভিযান চালিয়েছে আমাদের সেনা। আর সেই সফল অপারেশনকে অপমান করে মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে জাতীয় গর্বের এই মুহূর্তকে বিতর্কিত করেছেন।”
সভাস্থলে উপস্থিত বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে অমিত শাহ প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, “মোদীজি যখন বাংলায় সফরে এলেন, তখনই কেন এই অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আপত্তি তুললেন মুখ্যমন্ত্রী? বাংলার মানুষ নিহত হলে কোনও কথা বলেননি, অথচ ভোটের মুখে সেনার সাফল্য নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন? এটা কেবল অপারেশন সিঁদুরের বিরোধিতা নয়, বরং ভারতের মা-বোনেদের সম্মানবোধের বিরুদ্ধেও একপ্রকার আঘাত।”
তিনি আরও অভিযোগ তোলেন, “এই বিরোধিতার নেপথ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট ভোটব্যাঙ্ক তুষ্ট করার প্রবণতা। মুসলিম ভোটারদের মন জিততেই তিনি এমনটা করেছেন। বাংলার নারীশক্তির কাছে আমি আবেদন জানাচ্ছি—এই অপমানের যোগ্য জবাব দিন। সিঁদুরের মূল্য বুঝিয়ে দিন ব্যালট বাক্সে।”
তবে এই সমস্ত অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য পাল্টা বলেন, “আমরা সেনাবাহিনীর কোনও অপারেশনের বিরোধিতা করছি না। আমাদের আপত্তি বিজেপির পক্ষ থেকে সেনার সাফল্যকে সিঁদুরের সঙ্গে মিশিয়ে রাজনৈতিক লাভ তোলার প্রবণতায়। এটাই আমাদের মূল বক্তব্য।”