নিউজ ডেস্ক : মোদি ঘনিষ্ট মিডিয়া চ্যানেল রিপাবলিক টিভির এডিটর অর্ণব গোস্বামীর মুখোশ ইতিমধ্যেই উন্মোচিত হয়েছে দেশের সামনে কিন্তু এখনও দেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমের বেশিরভাগ এই ব্যাপারে নীরব রয়েছে। নীরব রয়েছেন বিজেপি নেতারা যারা কিছুদিন আগে অর্ণব এর গ্রেফতার এর বিরুদ্ধে কোনো কারন ছাড়াই সরব হয়েছিলেন। তবে অর্নবের মুখোশ খুলে গেল বার্কের প্রাক্তন সিইও পার্থ দাশগুপ্তের দেয়া এক লিখিত বয়ানে। এবার তিনি জানিয়েছেন, অর্ণব তাকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিল তার চ্যানেলের রেটিং দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ করার জন্য। এছাড়াও তাকে সুইজারল্যান্ড, সুইডেনের মতো দেশে সপরিবারে ভ্রমণের জন্য দিয়েছিল ১২০০০ ডলার।
পার্থ দাস গুপ্ত তার লিখিত বয়ানে জানিয়েছেন, “আমি এবং অর্ণব পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত ২০০৪ সাল থেকে। টাইমস নাও নিউজ চ্যানেলে পরবর্তীতে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। ২০১৩ সালের আমি বার্কের সিইও পদে নিযুক্ত হই এবং ২০১৭ সালে অর্ণব গোস্বামী রিপাবলিক টিভি চালু করেন। অর্ণব ভালোভাবেই জানত টিআরপি সিস্টেম কিভাবে কাজ করে তা আমি জানি। তাই তার চ্যানেল চালু করার পূর্ব থেকেই অর্ণব আমাকে তার চ্যানেলকে সবরকম সাহায্য করার জন্য অনুরোধ জানাতেন। বিনিময় ভবিষ্যতে তিনি অন্য ক্ষেত্রে আমাকে অনেক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।”
তার বয়ান আরো বিবৃত করে, “আমি আমার টিমের সঙ্গে বার্ক এর তরফ থেকে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করেছিলাম রিপাবলিক টিভিকে রেটিং এর দিক থেকে ভারতের এক নম্বরে পৌঁছে দিতে এবং তার স্থান ধরে রাখতে। ২০১৭ সালে অর্ণব গোস্বামী সেন্ট রেগিস হোটেলে দেখা করে আমাকে সুইজারল্যান্ড ট্যুরের জন্য ৬০০০ ডলার দিয়েছিল। একই হোটেলে ২০১৯ সালের আমাকে সপরিবারে ডেনমার্ক এবং সুইডেন ভ্রমণের জন্য আরও ৬০০০ ডলার দিয়েছিল। ২০১৭ সালে আইটিসি প্যারেলে আমাকে অর্ণব গোস্বামী ২০ লাখ টাকা দিয়েছিল। একই জায়গায় ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ও ১০ লাখ করে টাকা অর্ণব গোস্বামী আমাকে দেয়।”
প্রাক্তন ভারতীয় পার্থ দাস গুপ্তের সঙ্গে অর্ণব গোস্বামী হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হিস্ট্রি প্রকাশ্যে আসার পর তার এই বয়ান রাজনৈতিক দল বিজেপি, যার হয়ে অর্ণব গোস্বামী কাজ করে তাদেরকে আরও অস্বস্তিতে ফেলে দিতে পারে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। মুম্বাই পুলিশ ইতিমধ্যেই এই মামলায় ৩৬০০০ পৃষ্ঠার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করেছে ১১ ই জানুয়ারি। উল্লেখ্য এ ঘটনায় প্রথম চার্জশিট পেশ করা হয়েছিল গত বছর নভেম্বর মাসে। চার্জশিটে পার্থ দাস গুপ্ত ছাড়াও নাম রয়েছে রিপাবলিক টিভি নেটওয়ার্ক এর সিইও বিকাশ খানচন্দনির। তবে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে যে অপরাধে পার্থ দাস গুপ্ত এখন মুম্বাই পুলিশের হেফাজতে একই অপরাধ আরো বেশি মাত্রায় করেও কিভাবে মুক্ত বিজেপির দালাল অর্ণব গোস্বামী? শাসক দলের সঙ্গে যোগসাজশ এবং অবৈধ আঁতাত থাকলে এভাবেই কি দেশের বিচার ব্যবস্থাকে ফাঁকি দেয়া সম্ভব!