বেলডাঙার ১১০ বিঘা ওয়াকফ সম্পত্তি বেদখল ,সম্পত্তি উদ্ধারে হাইকোর্টের দ্বারস্থ গ্রামবাসীরা

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20200916-WA0056

এনবিটিভি ডেস্ক : গোটা দেশেই ওয়াকফ সম্পত্তি বেদখল ও ওয়াকফ সম্পত্তির উপর অবৈধ নির্মাণ কাজের ঘটনা প্রায় শোনা যায় । বিভিন্ন জায়গায় ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধারে প্রশাসনিক উদাসীনতাও লক্ষ্য করা যায় । বেলডাঙা ২ নম্বর ব্লকের মিলকি গ্রামের নবাবী আমলের ১১০ বিঘা মিলকি মসজিদের জমিকে অবৈধ ভাবে জমি রেকর্ডের অভিযোগ উঠলো প্রাক্তন ৩ মোতাওয়াল্লীদের বিরুদ্ধে । ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধারে বোর্ডের নির্দেশ থাকা স্বত্বেও প্রশাসনের অসহযোগিতার ফলে তা সম্ভব হচ্চেনা । এদিকে মুর্শিদাবাদ জেলার সর্বস্তরের প্রশাসনিক আধিকারিকরা জড়িত আছে বলে অভিযোগ উঠছে । স্থানীয় বিডিও সমীর রঞ্জন মান্নার সঙ্গে যোগাযোগ করলে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ।

শেখ আফসার হোসেন ওয়াকফ এস্টেট মিলকি মসজিদ । নবাবী আমলে দানবীর আফসার হোসেন এই সম্পত্তি ওয়াকফ করেন । যার মোট ১১০ বিঘার সম্পত্তির বেশিরভাগটাই চাষের জমি ।তাছাড়া রয়েছে বড়ো বড়ো পুকুর ও ডোবা ।একই সঙ্গে রয়েছে ঐতিহ্যশালী মসজিদ যার ইসি নাম্বার ১২০৭ । যেটা ওয়াকফলিল্লাহ অর্থাৎ এই জমির উপর আফসার হোসেনের পরিবারের কোন অধিকার থাকবে না এটি সম্পূর্ণ রূপে মুসলিমদের সম্পত্তি । এই সম্পত্তি দেখভাল করার জন্য ওয়াকফ বোর্ডের তরফ থেকে মোতোওয়াল্লী নিয়োগ করা হয় সব কিছু ঠিকঠাক চললেও সমস্যা দেখা দেয় ১৯৫৮ সাল থেকে ।সেই সময় মোতোওয়াল্লির দায়িত্ব দেওয়া হয় গোলামপির নামক এক ব্যাক্তিকে । তখন থেকে জমি বেদখল হতে শুরু হয় একের পর এক জমি নিজের নামে রেকর্ড করতে শুরু করে গোলামপির । পরবর্তীতে তার তিন ছেলে বাকবুল মঞ্জুর ,ইকবাল মঞ্জুর ,কবির মঞ্জুর পরবর্তীতে মোতওয়াল্লী নিয়োগ করা হয় । তাদের আমলে বেশিরভাগ সম্পত্তি নিজেদের নামে রেকর্ড করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ । তার পর তারা এই সম্পত্তি বিক্রি করে গ্রাম ছেড়ে বহরমপুর শহরে এসে বসবাস শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা ।

পরবর্তীতে বিষয়টি গ্রামের কিছু শিক্ষিত যুবকদের নজরে আসতেই জমি উদ্ধারে তৎপর হয়ে উঠে গ্রামবাসীরা ।গ্রামবাসীরা ওয়াকফ বোর্ডের দ্বারস্থ হোন।ওয়াকফ বোর্ড গোলামপিরের তিন ছেলেকে মোতাওয়াল্লির পদ থেকে সরিয়ে একটি কমিটি গঠন করে সেই সঙ্গে জমির রেকর্ড সংশোধন করে সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। বোর্ডের নির্দেশে বিএলআরও অফিসের দ্বারস্থ হলেও কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের ।

বর্তমান কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, সম্পত্তি ১১০ বিঘা হলেও সম্পত্তির কোন আয় পাচ্ছেনা ওয়াকফ বোর্ড ।অন্যদিকে অবৈধ ভাবে জমি দখল করে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে বাকবুল , কবির ,ইকবালরা ।বহরমপুরে গিয়ে প্রশাসনকে প্রভাবিত করছে ও প্রশাসন সম্পত্তি উদ্ধারে সদর্থক ভূমিকা পালন করছে না বলে অভিযোগ৷ প্রশাসনের উদাসীনতার ফলে কমিটির পক্ষ থেকে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান ।

ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধারে আইনি সহযোগিতা করছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিশিষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল মোমিন হালদার ।ওয়াকফ বোর্ডের নির্দেশ থাকা স্বত্বেও ১৪ বছর কেটে যাওয়ার পরও রেকর্ড সংশোধন হয়নি । এবার হাইকোর্টে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি তাহলে প্রশাসনের অনীহার কারনটিও প্রকাশ পাবে বলে জানান । এই সম্পত্তি উদ্ধারে গ্রামবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন এসডিপিআই এর রাজ্য সভাপতি তায়েদুল ইসলাম । তিনি বলেন অন্যায় ভাবে জমি দখল করে আছে পূর্ববর্তী মোতোওয়াল্লীরা । আমরা দলগতভাবে গ্রামবাসীদের পাশে থেকে এই সম্পত্তি উদ্ধার করার চেষ্টা করছি । তিনি আরও বলেন রেকর্ড সংশোধনের বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নিতে চান বলে আমাদের জানিয়েছেন বেলডাঙ্গা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও সমীর রঞ্জন মান্না । তিনি আরও বলেন আমাকে দুই দিন সময় দিলে বিএলআরও’র সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে দিতে চায় । এটা অনেক দিনের সমস্যা ঠিক কি কারনে সমাধান হচ্চে না সেটা জানিনা । গ্রামবাসীরা আমার কাছে আগেও এসেছে ।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর