সাধারণ মানুষের কয়েক কোটি টাকা প্রতারণা করে ফেরার বিজেপি নেতা

এনবিটিভি, নদীয়া: এলাকার বাসিন্দাদের থেকে কয়েক কোটি টাকা প্রতারণা করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির এসসি মোর্চার নদিয়া দক্ষিন সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি অমিতোষ বসুর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে গাংনাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপিরই এক নেতা। তবে এক মাস কেটে গেলেও হদিশ মেলেনি ওই নেতার। ঘটনা সামনে আসার পরই অমিতোষের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে সক্রিয় হয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।

প্রসঙ্গত, নদিয়ার গাংনাপুর থানার ঘোলার বাসিন্দা অমিতোষ বসু মাস কয়েক আগে বিজেপির নদিয়া দক্ষিন সাংগঠনিক জেলার এসসি মোর্চার সভাপতি নিযুক্ত হন। তার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ গাংনাপুর, ধানতলা এবং আশপাশের কিছু এলাকার বাসিন্দাদের থেকে তিনি টাকা তুলছিলেন। নিজে একটি সমিতি তৈরি করে গ্রামের মানুষজনকে টাকা সেখানে দৈনিক সঞ্চয়ের নামে টাকা রাখতে বলে সেই টাকা আত্মসাত করেন। পরে বেশি অঙ্কের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই টাকা আর ফেরত দেননি বলে অভিযোগ। জানা গেছে, সপ্তাহ দুয়েক আগে পায়রাডাঙার বাসিন্দা বিজেপির প্রাক্তন অফিস সম্পাদক ও এসসি মোর্চার নেতা সুভাষ বিশ্বাস গাংনাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অমিতোষের বিরুদ্ধে। তার অভিযোগ, একটি সমিতি তৈরি করে অমিতোষ সঞ্চয়ের নামে বহু লোকের থেকে কয়েক কোটি টাকা তুলেছে। বহু গরীব মানুষ তাকে বিশ্বাস করে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। সুভাষের কাছ থেকে ঋনের নাম করে আট লক্ষ টাকা নিয়েছে। তবে সেই টাকা আর ফেরত দেয়নি। গত নভেম্বর মাসে তার কাছে টাকা চাইলে সে সকলকে জানান ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে সবাইকে দেবে। এরপরই সে বাড়ি ছেড়ে সপরিবারে পালিয়ে যায়।

সুভাষ বলেন, “গ্রামের গরীব মানুষের কয়েক কোটি টাকা সে আত্মসাত করে পালিয়েছে। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু এখনও সে ধরা পড়েনি। পুলিশকে আমরা বারবার বলার পরেও গ্রেফতার করা যায়নি। ব্যবস্থা না হলে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব।”

অমিতোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরে এলাকায় অস্বস্তিতে পড়েছেন বিজেপি নেতারাও। ইতিমধ্যেই তার সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছেন তারা। অমিতোষ পালানোর আগেই দলের পদ থেকে ইস্তফা দেন বলে দাবি বিজেপির। বিধানসভা ভোটের পর থেকেই দলের সঙ্গে সেভাবে সম্পর্ক রাখেননি বলে জানাচ্ছেন বিজেপি নেতারা।

বিজেপির কিষান মোর্চার নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশোক বিশ্বাস বলেন, “উনি আগেই দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেছিলেন। গাংনাপুর ছাড়াও আশপাশের অন্যান্য এলাকা মিলিয়ে প্রায় ৩০০ মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। আমরা চাই ওর শাস্তি হোক।”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

Latest articles

Related articles