করোনা, নাম এক মূর্তিমান বিভীষিকার। ভয় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার, ভয় নিজেদের পরিবারের কারো আক্রান্ত হওয়ার, ভয় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর।তার ওপর আরো একটা অতিরিক্ত ভয় যুক্ত হয়েছে শ্রীলঙ্কার মুসলিমদের মনে। তা হলো কোনো মুসলিম করোনা আক্রান্তদের হলে তাদের ধর্মীয় রীতির বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কা সরকার তাদেরকে আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছে।যদিও শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে এবছরের শুরুতে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল দাহ এবং কবর করা যাবে কিন্তু বর্তমানে শ্রীলঙ্কার সরকার সেই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সংশোধনী এনে করোনা আক্রান্ত মুসলিমদের মৃতদেহ পুড়িয়ে দিচ্ছে। এটি মুসলিমদের জন্য এক চরম বিব্রতকর এবং অপমানজনক পরিস্থিতি।
শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, করোনা আক্রান্ত দেহ কবরস্থ করলে পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।কিন্তু অনেক পরিবেশবিদদের মতে বর্তমান সময়ে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা উদ্বেগজনক ভাবে বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট পরিবেশ দূষণ জনিত অবস্থায় মৃতদেহ দাহ করলেই পরিবেশের ওপর বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যদিও পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশে মৃতদেহ কবরস্থ করার রীতি বেশি প্রচলিত এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকাতেও দাহ করা এবং কবরস্থ করা দুটো রীতিকেই বৈধতা দেওয়া হয়েছে।সেই অনুসারে ১৮৫ টি দেশে করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ দাহ করা এবং কবরস্থ করার সংস্থান আছে।
শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্ট গত ১ লা ডিসম্বর দেওয়া এক রায়ে করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ বা সন্দেহজনক করোনা আক্রান্তদের মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বীকৃতি দিয়েছে।আবার সরকারি ভাবে এই জবরদস্তি পোড়ানোর জন্য খরচও নেওয়া হচ্ছে মৃতের মুসলিম পরিবারের কাছে থেকে যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২০০০০-২৪০০০ টাকার মতো।
শ্রীলঙ্কায় ২০১৪,২০১৭ ও ২০১৮ সালে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৌদ্ধদের আক্রমনে প্রাণ হারায় বহু মুসলিম,গৃহহীন হয় বহু মুসলিম। ২০১৯ সালে খ্রিস্টধর্ম এক অনুষ্ঠানে আইএস সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমনের পর থেকে মুসলিমরা আরো বেশি শঙ্কার মধ্যে আছে।তার ওপর করোনা কালে এই বিপদ বাড়তি দুর্দশার কারণ।