এনবিটিভি ডেস্কঃ হরিয়ানায় দীর্ঘদিন ধরে গুরুগ্রামে প্রশাসনের অনুমতিতে শুক্রবারের নামাজ খোলা যায়গাতে হয়ে আসছিল। সম্প্রতি গুরুগ্রামে খোলা জায়গাতে শুক্রবারের নামাজ পড়তে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন প্রশাসনের সম্মুখে তীব্র বিরোধিতা করতে দেখা গেছে। এই সংবাদ বিভিন্ন মাধ্যমে দেশ জুড়ে ছড়িয়েও পড়ে। এমনকি নিন্দার ঝড়ও ওঠে। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয় নাই।
এই খোলা জায়গায় শুক্রবারের নামাজ বিতর্ক নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন হরিয়ানার প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ আদিব। তাঁর যুক্তি ছিল, প্রশাসনের অনুমতি থাকার পরেও নামাজের বাধা দেওয়া যায় কি ভাবে। কেন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে কনো প্রকার ব্যবস্থা নিচ্ছেনা প্রশাসন।
অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করায়, হরিয়ানা পুলিশ স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী নেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ আদিব এবং অন্য দু’জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা নথিভুক্ত করে। তাদের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী নেতারা অভিযোগ করে বলেন, যারা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করতে গিয়েছিল তারা মূলত মসজিদ নির্মাণের জন্য জমি দখল এবং দাঙ্গা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের গুরুগ্রাম শহরের নির্দিষ্ট উন্মুক্ত স্থানে শুক্রবার নামাজের প্রস্তাবিত জায়গার বিরুদ্ধে সমস্যা তৈরিতে জড়িত গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার জন্য হরিয়ানার মুখ্যসচিব, পুলিশের মহাপরিচালক এবং অন্যদের বিরুদ্ধে অবমাননার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে প্রাক্তন সাংসদ আদিব সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করেন। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত বিষয়কে ক্ষতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ আবেদনও করেন তিনি।
অন্যদিকে, গুরুগ্রাম ভারত মাতা বাহিনী নামে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা দীনেশ ভারতী অভিযোগ তুলে তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩ ধারা (দাঙ্গা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে উস্কানি দেওয়া) এবং ৩৪ (সাধারণ অভিপ্রায়) এর অধীনে প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ আদিব, আবদুল হাসিব কাশমি এবং মুফতি মোহাম্মদ সেলিম কাশমির বিরুদ্ধে সেক্টর ৪০ নম্বর থানায় এফআইআর নথিভুক্ত করে।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত তিনজনই গুরুগ্রাম মুসলিম কাউন্সিলের সদস্য। যারা গুরুগ্রামে খোলা জায়গায় শুক্রবারের নামাজে বাধা দেওয়ার জন্য হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলির সাথে চলমান সমস্যা নিয়ে আলোচনা করত। হিন্দুত্ববাদীদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তাদেরকে এখন মামলায় ঝুলিয়ে দিলো গুরুগ্রাম প্রশাসন।
ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় যারা সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হচ্ছে। এটা কেমন ন্যায়বিচার, প্রশ্ন উঠছে নানান মহলে।