দিল্লী, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মঙ্গলবার কর্ণাটক আদালত হিজাব বিতর্কের রায় নিয়ে দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছে। এদিনের রায়ের পরে অল ইন্ডিয়া ইমামস্ কাউন্সিল তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়। ইমামস্ কাউন্সিল জানায়, হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ মুসলমানদের উপর প্রযোজ্য নয়, মুসলমান যেকোনো অবস্থায় শরীয়তের উপর অবিচল থেকে তা পালন করবে।
অল্ ইন্ডিয়া ইমামস্ কাউন্সিলের সর্বভারতীয় সভাপতি, মাওলানা মোহাম্মদ আহমদ বেগ নদভী, তাঁর এক বিবৃতিতে বলেন যে, কর্ণাটক হাইকোর্ট হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করে এ কথা বলে যে, হিজাব ইসলামী নির্দেশনার মধ্যে নয়! এই রায় সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক এবং ইসলামী আইনের সম্পূর্ণ বিরোধী।
এই সিদ্ধান্ত কোনভাবেই মুসলমানরা মেনে নেবে না। তিনি আরো বলেন যে, এই ঘোষণা ধর্মনিরপেক্ষ মানুষদের কঠিন দুঃখ ব্যাথা দিয়েছে। আরও আশ্চর্যের বিষয় যে, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষা করার দায়িত্ব যে সংস্থার,সে নিজেই নাগরিকদের ব্যক্তিগত অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে লেগেছে। হিজাব বা ওড়না এটি একটি এমন পোশাক যা দেশের সমস্ত ধর্মালম্বী মানুষের মেনে চলা প্রথা।
তার পরেও কেবলমাত্র মুসলমানদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং গভীর ষড়যন্ত্র। নিজের ইচ্ছামত কাপড় পরা সাংবিধানিক অধিকার হওয়ার সাথে সাথে,ছাত্রীদের কে পড়ানো বিষয়ের একটি অংশ। মহিলাদের হিজাবের গুরুত্ব পবিত্র কোরআনে অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং হাদীস গ্রন্থে একাধিক হাদীস দ্বারা তার গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।
কর্ণাটক হাইকোর্টের এই ফয়সালার দ্বারা একইসঙ্গে সাংবিধানিক অধিকার হরণ ও পবিত্র কোরআনের নির্দেশ কে ভুল প্রমাণের অপচেষ্টার শামিল।
যেভাবে বাবরি মসজিদ বিষয়ে রায়, অধিকারকে জলাঞ্জলি দিয়ে কেবলমাত্র বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে দেয়া হয়েছিল, সেভাবেই কর্ণাটক হাইকোর্ট সত্যতা ও অধিকারের বিষয় ভুলে গিয়ে,একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে, অনুমানের উপর ভিত্তি করে ফায়সালা শুনিয়েছে। এমন মনোভাব ও গতিবিধি দেশের আগামী দিনের জন্য অনেক বড় বিপদের বার্তা বহন করছে।
জাতীয় সভাপতি আরও বলেন, যখন সারাদেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের অধিকার বিভিন্নভাবে একের পর এক হরণ করার চেষ্টা চলছে!
সেই পরিস্থিতিতে জনগণের অধিকার পাইয়ে দেওয়ার সংস্থা, আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একটি বিশেষ সম্প্রদায় কে খুশি করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে যতক্ষণ পর্যন্ত এই অবিচার এবং অধিকার হরণের পরিবেশ-পরিস্থিতি দূর না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিটি জনগণের ধর্মীয় ও সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষার জন্য, লড়াই চালিয়ে যাওয়া প্রতিটি জনগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
আসুন! এই অধিকার হরণ এবং অসাংবিধানিক ভাবে অত্যাচারপূর্ণ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সকলে মিলে সোচ্চার হই।
অল্ ইন্ডিয়া ইমামস্ কাউন্সিল এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সব সময়ই ও সর্ববস্থায় মানুষের অধিকার সুরক্ষার জন্য প্রথম সারিতে থাকবে।