এনবিটিভি ডেস্কঃ কেরালায় ভারতীয় জনতা পার্টি মরিয়া হয়ে উঠেছে রেস্তোঁরাগুলিতে ‘হালাল ব্যবস্থা’ এবং ‘হালাল’ বোর্ড নিষিদ্ধ করার জন্য। রবিবার তিরুবনন্তপুরমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের কেরালা রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক পি সুধীর বলেন, “হালাল হল তিন তালাকের মতো একটি খারাপ প্রথা।”
কেরালায় হালাল খাবার ও ব্যবস্থাপনা নিষিদ্ধ করার জন্য বিজেপি রেস্তোঁরাগুলির বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারণা করে আসছে বেশ কয়েকদিন ধরে। ইতিমধ্যে রাজ্যের বিরোধী নেতারা এবং একটি নেতৃস্থানীয় হোটেল মালিকদের ইউনিয়ন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
কেরালার ক্ষমতাসীন বামফ্রন্টের এক সিনিয়র নেতা কোডিয়েরি বালাকৃষ্ণান বলেন যে, “বর্তমান ‘হালাল ব্যবস্থা’ বিতর্কটি সমাজকে বিভক্ত করার জন্য আরএসএসের প্রচেষ্টার ফল। তিনি আরও বলেন, সাম্প্রদায়িক প্রচারণার উদ্দেশ্য বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে মেরুকরনের প্রচেষ্টা। এই প্রচার কেরালার সমাজের জন্য ভাল নয়। এখানে সফলও হবে না।”
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক কেরালার মন্দিরের বিষয়গুলি ট্রাভাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ড পরিচালনা করে থাকে। এই বোর্ডের অভিযোগ, রাজ্যে এক মন্দিরে খাবার প্রস্তুত করার জন্য ‘হালাল স্ট্যাম্প’ যুক্ত গুড় ব্যবহার করা হয়। যদিও পরে জানা যায়, গুড়ের বস্তাগুলিতে হালাল শংসাপত্র প্রদর্শিত করার কারণ হল, মন্দিরে আইটেম সরবরাহকারী সংস্থা এটি বিদেশেও রপ্তানি করে থাকে। আরও দেখা গিয়েছে যে, গুড়টি অমুসলিমদের দ্বারা পরিচালিত একটি সংস্থা দ্বারা বিতরণ করা হয়েছিল।
রাষ্ট্র সাম্প্রতিক অতীতে কিছু অনুরূপ সাম্প্রদায়িক প্রচারণা প্রত্যক্ষ করেছে, কেরালায় গত বছর হালাল খাবারকে লক্ষ্য করে ‘বয়কট হালাল’ শিরোনামে একই ধরনের প্রচারণা চালানো হয়েছিল।
সংঘ পরিবার ছাড়াও, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন এবং অ্যালায়েন্স ফর সোশ্যাল অ্যাকশন (CASA) এর মতো কিছু খ্রিস্টান দলও কেরালায় ইসলামফোবিয়া ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নিযুক্ত রয়েছে।
কিছু পণ্ডিত উল্লেখ করে বলেন যে, কীভাবে রাজ্যের কিছু খ্রিস্টান দল তাদের মুসলিম বিরোধী বক্তব্যে হিন্দুত্ববাদী শক্তির সাথে সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পাচ্ছে? সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করে এবং ইসলামিক পরিভাষাগুলির ভুল ব্যাখ্যা করেছে। অ্যালায়েন্স ফর সোশ্যাল অ্যাকশন এক কেরালার ইসলামফোবিক ফেসবুক পেজে নানান ধরনের ইসলাম বিরোধী বিষবাস্প ছড়িয়ে আসছে বিভিন্ন শিরোনামে যেমন, ‘লাভ জিহাদ’, ‘মাদক জিহাদ’, ‘ল্যান্ড জিহাদ’, ‘অর্থনৈতিক জিহাদ’, ‘চিকিৎসা জিহাদ’ এবং ‘আইনি জিহাদ’।
এই গ্রুপগুলির ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি ঘৃণা এবং জেনোফোবিয়ায় পরিপূর্ণ। সরকার এখনও তাদের প্রচারণার বিরুদ্ধে কোনও কার্যকর আইনি ব্যবস্থা নেয়নি, যা বেশিরভাগ সাইবারস্পেসে রয়েছে।