রামপুরহাট, এনবিটিভি ডেস্ক: গতকাল বীরভূমের রামপুরহাট ব্লকের বাগটুই গ্রামের উপপ্রধান ভাদু সেখ চা দোকানে চা খাওয়ার সময় তার ওপর বোমার হামলা হয়। ওই হামলায় প্রান হারায় উপপ্রধান ভাদু সেখ। অভিযোগের তীর ওঠে অঞ্জু সেখের বিরুদ্ধে। এরপর সন্ধ্যা থেকে গ্রাম জুড়ে চলে ব্যাপক বোমাবাজি। এই ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অঞ্জু শেখের পরিজনেরা বাড়ির ভিতরে থাকা অবস্থায় বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই নৃশংস ঘটনায় মৃত্যু হয় দশ জন মহিলাসহ দুই জন শিশুর। গোটা ঘটনায় তোলপাড় হয়ে যায় রাজ্য রাজনীতি অভিযোগের তীর ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন তোলা হয় পুলিশি ব্যবস্থা নিয়ে।
জানা গিয়েছে ওই গ্রাম রামপুরহাট পুলিশ স্টেশন থেকে মাত্র দশ মিনিট দূরত্বে অবস্থিত। তবুও এই নৃশংস ঘটিনার আঁচ পৌঁছাতে এতো দেরী হল কেন? আর গতকাল এক রাজনৈতিক নেতা খুন হওয়া সত্ত্বেও গোটা গ্রাম জুড়ে কেন দেওয়া হয়নি কোনো পুলিশি নিরাপত্তা ব্যাবস্থা? উঠেছে একধিক প্রশ্ন।
বর্তমানে ওই গ্রামে তদন্তের জন্য পৌঁছেছে সিট এর আধিকারিকরা।এই ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য বিজেপি নেতারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দারস্থ হয়। আজ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে পাঁচজনের একটি দল পাঠানো হবে যার মধ্যে রয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ ব্রজলাল, লোকসভার সাংসদ সত্যপাল সিং, আই পি এস কেসি রামা মূর্তি, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং প্রক্তন আই পি এস ভারতী ঘোষ। আজ সেখানে গিয়ে হাজির হয় সিপিআইএম এর রাজ্য সভাপতি মহাম্মদ সেলিমসহ তার সহকারীরা। ও আজ রাজ্যের বিজেপির সাংসদ ও বিধায়কদের ৫৬ জন দল সেখানে গিয়ে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে গতকাল বিধায়ক অনুব্রত মণ্ডলকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,”আমার বাড়ি বোলপুর, আর ঘটনাটি ঘটেছে রামপুর হাটে তাই কি কারণে এই ঘটনাটি ঘটলো তার সঠিক কারন আমার জানা নেই। তবে মনে হচ্চে শর্ট সার্কিট থেকে বা টিভি বার্স্ট করে এই ঘটনা ঘটতে পারে”।এই প্রসঙ্গে এক সাংবাদিক তাকে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানালে তিনি বলেন, “১০ জন নয় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশ তদন্তের পর জানা যাবে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে”।
এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই ঘটনার জন্য দ্রুত সিবিআই তদন্ত চায়”।বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মুখ্যমন্ত্রীর পদ ত্যাগের দাবি জানায়।
এই বিষয়ে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “পশ্চিম বঙ্গের ওপর আর্টিকেল ৩৬৫ প্রয়োগ করার সময় এসে গেছে আমি নিজে রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে দাবি জানাবো”।
তবে এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেন, “এই ঘটনার মধ্য দিয়ে তৃনমূলের বিরুদ্ধে এক বৃহত্তম চক্রান্ত চলছে”। অন্যদিকে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে ওই গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এবং এই প্রসঙ্গেমুখ্য মন্ত্রী বলেন, “তৃণমূলের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত চলছে, সিটকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে”। এবং সংবাদিক সম্মেলনের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান কাল তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছাবেন।
ঘটনা এতক্ষন পরও এখনও পর্যন্ত মৃতদের তালিকা প্রকাশ হয়নি তবে জানা গিয়েছে ২৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এই নৃশংস ঘটনায় অভিযোগের তীর উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে।